ক্ষমতার অপব্যবহার করে পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পে ৬০ কাঠা সরকারি প্লট বরাদ্দ নেওয়ার অভিযোগে ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী স্বৈরাচার শেখ হাসিনা, তার বোন শেখ রেহানা, ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় ও মেয়ে পুতুলসহ ১০০ জনের বিরুদ্ধে দুদকের দায়ের করা ছয়টি মামলা বিচারের জন্য প্রস্তুত হয়েছে।
আজ রবিবার ঢাকা মহানগর সিনিয়র স্পেশাল জজ জাকির হোসেন গালিব মামলাগুলো বিশেষ জজ আদালতে বদলির আদেশ দেন।
এদিন পৃথক ছয় মামলায় শেখ হাসিনাসহ ১০০ জনের আদালতে হাজির হওয়ার দিন ধার্য ছিল। কিন্তু তারা অনুপস্থিত থাকায় আদালত মামলাগুলো বিচারের জন্য বিশেষ জজ আদালতে পাঠানোর নির্দেশ দেয়। এখন এসব মামলার বিচারিক কার্যক্রম সেখানে চলবে।
বিষয়টি নিশ্চিত করে দুদকের প্রসিকিউটর মীর আহমেদ আলী সালাম বলেন, ‘প্লট বরাদ্দে দুর্নীতির ছয়টি মামলায় গেজেট প্রকাশ হয়েছে এবং মামলাগুলো বিচারের জন্য প্রস্তুত। আদালত সেগুলো বিশেষ জজ আদালতে বদলির আদেশ দিয়েছেন। বিশেষ জজ আদালতে মামলাগুলোর বিচারিক কার্যক্রম অনুষ্ঠিত হবে।’
এর আগে গত ১ জুলাই বিচারক আসামিদের শুনানির জন্য আজকে আদালতে হাজির হতে গেজেট প্রকাশের আদেশ দেন। সে অনুযায়ী গত ৩ জুলাই বিজিপ্রেস (বাংলাদেশ সরকারি মুদ্রণালয়) গেজেট প্রকাশ করে।
গেজেটে উল্লেখ করা হয়েছে, তফসিল বর্ণিত আসামিদেরকে জানানো যাচ্ছে যে, যেহেতু, তাদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি রয়েছে। যেহেতু এই কোর্ট বিশ্বাস করার যুক্তিসঙ্গত কারণ রয়েছে যে, তারা গ্রেফতার ও বিচারে সোপর্দকরণ এড়াবার জন্য আত্মগোপন করেছেন এবং তাদের আশু গ্রেফতারের সম্ভাবনা নেই। সেহেতু ১৯৫৮ সালের ক্রিমিনাল ‘ল’ এমেন্ডমেন্ট এ্যাক্ট ৬(১৩) ধারা বিধান অনুসারে তফসিল বর্ণিত মামলায় তাহাদেরকে আগামী ধার্য তারিখের মধ্যে এই কোর্টে হাজির হতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। অন্যথায় আপনাদের অনুপস্থিতিতেই বিচার কার্য সম্পন্ন করা হবে।
চলতি বছরের ১২ থেকে ১৪ জানুয়ারির মধ্যে এসব মামলা দায়ের করেন দুদকের উপ-পরিচালক সালাহউদ্দিন, সহকারী পরিচালক আফনান জান্নাত কেয়া ও এস এম রাশেদুল হাসান। তদন্ত শেষে ১০ মার্চ চার্জশিট জমা দেন তদন্ত কর্মকর্তারা।
১২ জানুয়ারি প্রথম মামলাটি করেন সহকারী পরিচালক আফনান জান্নাত কেয়া। এতে শেখ হাসিনা ও পুতুলসহ ১৬ জনকে আসামি করা হয়। তদন্তে আরও দুইজন যুক্ত হয়ে চূড়ান্ত আসামির সংখ্যা দাঁড়ায় ১৮ জনে। মামলাটিতে সাক্ষী রাখা হয়েছে ১৬ জন।
১৩ জানুয়ারি তিনটি মামলা দায়ের করা হয়। শেখ রেহানাকে প্রধান আসামি করে শেখ হাসিনা ও টিউলিপসহ ১৫ জনের বিরুদ্ধে উপ-পরিচালক সালাহউদ্দিন মামলা করেন। তদন্ত শেষে আরও দুইজনসহ ১৭ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দেন আফনান জান্নাত কেয়া।
আজমিনা সিদ্দিককে প্রধান আসামি করে ১৩ জানুয়ারি শেখ হাসিনা ও টিউলিপসহ ১৬ জনের বিরুদ্ধে সহকারী পরিচালক আফনান জান্নাত কেয়া মামলা করেন। পরে আরও দুইজন যুক্ত হয়ে চূড়ান্ত আসামি হয় ১৮ জন।
রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক, টিউলিপ ও শেখ হাসিনাসহ ১৬ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন সহকারী পরিচালক এস এম রাশেদুল হাসান। তদন্ত শেষে আরও দুইজন যুক্ত হয়ে চার্জশিট দেওয়া হয় ১৮ জনের নামে।
সবশেষে ১৪ জানুয়ারি দুইটি মামলা হয়। শেখ হাসিনাসহ আটজনের বিরুদ্ধে মামলা করেন উপ-পরিচালক সালাহউদ্দিন। পরে তদন্তে আরও চারজন যুক্ত হয়ে চার্জশিটে আসামির সংখ্যা দাঁড়ায় ১২ জনে। তদন্ত করেন সহকারী পরিচালক আফনান জান্নাত কেয়া।
শেখ হাসিনা ও সজীব ওয়াজেদ জয়সহ ১৫ জনের বিরুদ্ধে সহকারী পরিচালক এস এম রাশেদুল হাসান মামলা করেন। পরে তদন্তে দুইজন যুক্ত হয়ে চার্জশিটে আসামি হয় ১৭ জন।