English

34.5 C
Dhaka
মঙ্গলবার, জুলাই ২২, ২০২৫
- Advertisement -

সুশাসন নিশ্চিত করতে হবে: পরিবেশ অধিদপ্তরে অনিয়ম

- Advertisements -

সর্বোচ্চ দূষিত শহরের তালিকায় তিন নম্বরে রয়েছে বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকা। অন্য আটটি বড় শহরের অবস্থাও কাছাকাছি। গ্রামাঞ্চলের অবস্থাও খুব ভালো নয়। হাজার হাজার ইটভাটা প্রতিনিয়ত আমাদের নিঃশ্বাসে বিষ ঢালছে। শহরে-গঞ্জে বসতবাড়ির সঙ্গেই রয়েছে কারখানা। নদী-পুকুর-জলাশয় দূষিত হচ্ছে শিল্পবর্জ্যে। দেশে প্রতিবছর ৩৭ হাজার মানুষ মারা যাচ্ছে শুধু বায়ুদূষণের কারণে। দিন দিনই বাড়ছে দূষণের মাত্রা। অথচ আমাদের পরিবেশ অধিদপ্তর নির্বিকার। গত বুধবার ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) প্রকাশিত গবেষণা প্রতিবেদনেও উঠে এসেছে এমন চিত্র। ‘পরিবেশ অধিদপ্তরে সুশাসনের চ্যালেঞ্জ ও উত্তরণের উপায়’ শীর্ষক এই প্রতিবেদনে দেখা যায়, এখানে অনিয়ম ও অবৈধ অর্থ লেনদেনের রীতিমতো মহোৎসব চলে। তীব্র দূষণকারী কারখানাও পরিবেশ ছাড়পত্র পেয়ে যায়। ফলে উন্নত হওয়ার বদলে দেশের পরিবেশের অবনতিই বেশি হচ্ছে।

টিআইবির গবেষণা প্রতিবেদন নিয়ে প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, পরিবেশ অধিদপ্তরের এক শ্রেণির অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারী শিল্প-কারখানার পরিবেশ ছাড়পত্র দিতে শ্রেণিভেদে ৩৬ হাজার থেকে সর্বোচ্চ এক লাখ আট হাজার ৮০০ টাকা পর্যন্ত নিয়ে থাকেন। ৬৬ শতাংশ শিল্প-কারখানার পরিবেশ ছাড়পত্র দেওয়ার ক্ষেত্রে অবৈধ অর্থের লেনদেন হয়। ২০১৯ সালের এপ্রিল থেকে ২০২১ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ নানা উৎস থেকে এই গবেষণার তথ্য সংগ্রহ করা হয়।

আইনের শাসন, সক্ষমতা, স্বচ্ছতা, জবাবদিহি, অংশগ্রহণ, কার্যসম্পাদন, সমন্বয় ও অনিয়ম-দুর্নীতি—এই আটটি সূচকের ভিত্তিতে গবেষণায় প্রাপ্ত তথ্যাদি বিশ্লেষণ করা হয়। গবেষণায় বলা হয়, পরিবেশ অধিদপ্তর কার্যত দুর্বল, দুর্নীতিগ্রস্ত এবং অনেকাংশে অক্ষম ও অকার্যকর একটি প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে। টিআইবির গবেষণা-জরিপের আওতায় আসা ১৭ শতাংশ শিল্প-কারখানা স্থানীয় কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে অনাপত্তিপত্র না পেলেও পরিবেশ অধিদপ্তর থেকে ছাড়পত্র পেয়ে গেছে। সেটি কিভাবে সম্ভব হলো? প্রায় ৭২ শতাংশ শিল্প-কারখানা আবাসিক এলাকায় অবস্থিত। ৫১ শতাংশ শিল্প-কারখানা মেয়াদোত্তীর্ণ ছাড়পত্র দিয়ে কার্যক্রম চালাচ্ছে, যার ৭০ শতাংশ তথ্য সংগ্রহের সময় পর্যন্ত নবায়নের জন্য আবেদনই করেনি। এমন প্রতিষ্ঠানের পক্ষে দেশের পরিবেশ সংরক্ষণ ও উন্নয়নে কতটুকু ভূমিকা রাখা সম্ভব হবে, তা-ই এখন বিবেচনার বিষয়।

অবৈধ অর্থের লেনদেন যদি পরিবেশ ছাড়পত্রের ভিত্তি হয়, তাহলে সেই ছাড়পত্র দেশের পরিবেশ রক্ষা না করে বরং তা ধ্বংসই করবে। হাজার হাজার কোটি টাকা ব্যয় করে এমন অক্ষম ও ক্ষতিকর পরিবেশ অধিদপ্তর পালনের কোনো অর্থ নেই। একে ঢেলে সাজাতে হবে। এ অবস্থা থেকে উত্তরণে টিআইবি যে ১০ দফা সুপারিশ করেছে সেগুলো বিবেচনা করা যেতে পারে। অনিয়ম-দুর্নীতিতে জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে। প্রয়োজনে নিয়মিতভাবে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সম্পদের হিসাব নিতে হবে।

The short URL of the present article is: https://www.nirapadnews.com/im04
Advertisements
সর্বশেষ
- Advertisements -
এ বিভাগে আরো দেখুন