English

33 C
Dhaka
শনিবার, এপ্রিল ২৭, ২০২৪
- Advertisement -

উ. মেরুতে ক্রমবর্ধমান দাবানল, পরিবেশে মারাত্মক বিপর্যয়

- Advertisements -
Advertisements

বৈশ্বিক উষ্ণতাবৃদ্ধির প্রভাবে গত পাঁচ বছরে পৃথিবীর উত্তর মেরুতে (আর্কটিক বা সুমেরু) বিশাল দাবানলের ঘটনা ক্রমশ স্বাভাবিক হয়ে উঠছে। এর ফলে প্রতিনিয়ত গ্রিনহাউস গ্যাসের ব্যাপক নিঃসরণ ঘটছে।

বিশেষজ্ঞরা আশঙ্কা করছেন, চলমান প্রবণতাটি ক্রমশ ত্বরান্বিত হবে এবং দ্রুতই বিপজ্জনক (টিপিং পয়েন্ট) পর্যায়ে পৌঁছে যাবে।

Advertisements

বিজ্ঞান বিষয়ক সাময়িকী ‘সায়েন্স’-এ প্রকাশিত এক নতুন গবেষণাপত্রে একটি আন্তর্জাতিক গবেষক দল উত্তর-সাইবেরিয়ায় ১৯৮২ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত সংঘটিত দাবানলগুলো পর্যবেক্ষণ করে উল্লিখিত দাবি করেছেন।

গবেষণায় তারা স্যাটেলাইট ডেটার সাহায্যে দাবানলের আগুনের মাত্রাও নির্ধারণ করেছেন বলে ‌’সায়েন্স’-এর প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়। 

বিশ্লেষণে দেখা যায়, সময়ের সাথে সাথে দাবানলের ঘটনা উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। বিগত সহস্রাব্দের শেষ পর্যায় পর্যন্ত দাবানলের ঘটনাগুলো সংখ্যা ও মাত্রায় কম ছিল। কিন্তু তারপর থেকে তা প্রতিবছর ক্রমবর্ধমান হারে বাড়তে থাকে। ২০১৯ এবং ২০২০ সালে মাত্রা অনেক বেড়ে যায়। এই দুই বছরে সুমেরুতে দাবানলের আগুনে বিধ্বস্ত মোট এলাকা ছিল ৪৭ লাখ বর্গ কিলোমিটার। এটি ১৯৮২ সাল থেকে সাইবেরিয়ার মোট অগ্নি-বিধ্বস্ত এলাকার প্রায় অর্ধেকের সমান।

পরিবেশ বিশেষজ্ঞদের মতে, ২০১৯ থেকে ২০২০ সালে সুমেরুতে দাবানলের কারণে বায়ুমণ্ডলে মোট ৫৫ কোটি টন কার্বন-ডাই-অক্সাইড নিঃসৃত হয়েছে, যা প্রায় শিল্পোন্নত জার্মানির কার্বন নিঃসরণের সমান। গবেষণায় গত দুই বছরের ফল অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি। তবে ২০২১ এবং ২০২২ উভয় বছরই দাবানল ক্রমাগত বৃদ্ধি পেয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়।

গবেষকরা দাবানলের সম্ভাব্য কারণগুলো পর্যালোচনা করে দেখেছেন, ক্রমবর্ধমান বৈশ্বিক তাপমাত্রার সঙ্গে এর একটি জোরালো সংযোগ রয়েছে। আর্কটিকের সাইবেরীয় অংশে ২০১৯ এবং ২০২০ সালের গ্রীষ্মের গড় তাপমাত্রা ছিল যথাক্রমে ১১.৩৫ এবং ১১.৫৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা ১৯২৮-২০২০ সালের সমগ্র সময়ের গড় তাপমাত্রার চেয়ে ২.৬৫ এবং ২.৮২ ডিগ্রি বেশি। গবেষণায় উল্লেখ করা হয়, ক্রমবর্ধমান তাপমাত্রার কারণে সাইবেরিয়ার সবুজ শুকিয়ে যাচ্ছে। অতি দাহ্যতার কারণে এ অঞ্চলে অতি সহজেই দাবানলের সৃষ্টি হচ্ছে।

গবেষণায় আরো উল্লেখ করা হয়, আর্কটিক অঞ্চলের পিটসমৃদ্ধ মাটি প্রচুর পরিমাণে কার্বন সঞ্চয় করার সক্ষমতা রাখে। পিটমাটি সাধারণত মেরু অঞ্চলের মাটির পুরু উপরি স্তরে থাকে। গবেষকরা মনে করছেন যে, ক্রমবর্ধমান তাপের কারণে মাটির স্তরের পানিশূনতা হলে প্রকৃতিতে অবধারিতভাবে দাবানলের ঝুঁকি বেড়ে যায়। আর তাতে করে গ্রিনহাউস গ্যাসের বড় ধরণের নিঃসরণও অবশ্যম্ভাবী। আবার দাবানলও মাটিকে দ্রুত শুষ্ক করে ফেলতে পারে।

সাভানা এবং স্তেপের মতো ঘাসজমিসহ প্রাকৃতিক বনে দাবানল একধরনের স্বাভাবিক পরিবেশগত ঘটনা। তবে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে উচ্চ তাপমাত্রা এবং মানুষের অসাবধানতার ফলে উদ্ভুত পরিস্থিতিতে পৃথিবীর বিশাল বিশাল এলাকা আগুনে পুড়ে যাচ্ছে। ২০০১-২০১৮ সময়কালে প্রতিবছর পৃথিবীতে ৩৯ থেকে ৫১ কোটি হেক্টর এলাকা দাবানলে পুড়ে যায়।

সাবস্ক্রাইব
Notify of
guest
0 মন্তব্য
Inline Feedbacks
View all comments
Advertisements
সর্বশেষ
- Advertisements -
এ বিভাগে আরো দেখুন