English

34 C
Dhaka
রবিবার, মে ৫, ২০২৪
- Advertisement -

পালানোর জন্য মরিয়া চেষ্টা রাজাপক্ষে পরিবারের

- Advertisements -
Advertisements
Advertisements

শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপক্ষে ১৩ জুলাই পদতাগ করবেন, সে ঘোষণা আগেই দিয়েছিলেন। কিন্তু গণবিক্ষোভের মুখে শনিবার সরকারি দপ্তর ও প্রাসাদ ছেড়ে পালানোর পর আর জনসমক্ষে আসেননি। এবার দৃশত গণরোষের ভয়ে দেশ ছেড়েই পালানোর চেষ্টা করে যাচ্ছেন তিনি। কিন্তু মঙ্গলবার দুপুর পর্যন্ত সফল হননি তিনি।

গোতাবায়া রাজাপক্ষে দেশছাড়ার জন্য সোমবার কলম্বো বিমানবন্দরে গিয়ে অভিবাসন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে অবমাননাকর পরিস্থিতির সম্মুখীন হন। এরপর তিনি দ্বীপটি থেকে পালানোর জন্য নৌবাহিনীর টহল নৌযান ব্যবহার করার কথা পর্যন্ত ভেবেছিলেন। এএফপির অফিশিয়াল সূত্র এ কথা জানিয়েছে।

প্রেসিডেন্ট হিসেবে গোতাবায়া গ্রেপ্তার হওয়া থেকে সুরক্ষার অধিকারী। তার আশঙ্কা পদত্যাগের পর আটক হতে পারেন।

গোতাবায়া রাজাপক্ষে ‘ক্ষমতার শান্তিপূর্ণ হস্তান্তর সুগম করতে বুধবার পদত্যাগ করবেন বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। দেশের স্বাধীনতার পর থেকে সবচেয়ে খারাপ অর্থনৈতিক সংকট নিয়ে তার বিরুদ্ধে ব্যাপক বিক্ষোভের পর গোতাবায়া কলম্বোর সরকারি বাসভবন থেকে পালিয়ে যান। এরপর তিনি দুবাই যেতে চেয়েছিলেন বলে কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।

কিন্তু অভিবাসন কর্মকর্তারা গোতাবায়ার পাসপোর্টে সিল মারার জন্য ভিআইপি স্যুটে যেতে অস্বীকার করেন। প্রেসিডেন্ট তাদের চাপ দিয়ে বলেছিলেন, তিনি অন্যান্য বিমানবন্দর ব্যবহারকারীর কাছ থেকে প্রতিশোধের আশঙ্কায় সবার জন্য অভিন্ন ব্যবস্থার মধ্য দিয়ে যাবেন না।

প্রেসিডেন্ট এবং তার স্ত্রী সংযুক্ত আরব আমিরাতমুখী চারটি ফ্লাইট ধরতে ব্যর্থ হওয়ার পর বন্দরনায়েকে আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের পাশে একটি সামরিক ঘাঁটিতে রাত কাটিয়েছেন।

গোতাবায়া রাজাপক্ষের ছোট ভাই এপ্রিলে অর্থমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করা বাসিল রাজাপক্ষেও মঙ্গলবার ভোরে বিমানবন্দরকর্মীদের সঙ্গে একই রকম পরিস্থতির সম্মুখীন হন। তিনিও দুবাইগামী তার নিজের এমিরেটস ফ্লাইট মিস করেন।

বাসিল শ্রীলঙ্কা ছাড়াও মার্কিন নাগরিকত্বের অধিকারী। তিনি ব্যাবসায়িক ভ্রমণকারীদের জন্য একটি অর্থপ্রদানকারী পরিষেবা ব্যবহার করার চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু বিমানবন্দর এবং অভিবাসন কর্মীরা বলেন, তারা অবিলম্বে ‘ফাস্ট ট্র্যাক’ পরিষেবা দেওয়া প্রত্যাহার করে নিচ্ছেন।

বিমানবন্দরের একজন কর্মকর্তা এএফপিকে বলেছেন, ‘অন্য কিছু যাত্রী বাসিলের তাদের ফ্লাইটে ওঠার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করেছিলেন। পরিস্থিতি ছিল উত্তেজনাপূর্ণ। তাই তিনি দ্রুত বিমানবন্দর ছেড়ে চলে যান। ’

একটি কূটনৈতিক সূত্র জানিয়েছে, শনিবার রাজাপক্ষে পরিবারের সদস্যরা উত্তেজিত জনতাকে এড়াতে দ্রুত পালিয়ে যাওয়ার সময় বাসিল প্রাসাদে তার পাসপোর্ট ফেলে যান। তাকে পরে একটি নতুন মার্কিন পাসপোর্ট জোগাড় করতে হয়।

সরকারি সূত্র জানিয়েছে, নথিপত্রে ভরা একটি স্যুটকেসও রাজকীয় প্রাসাদে ফেলে যাওয়া হয়েছে। এতে নগদ প্রায় দুই কোটি শ্রীলংকান রুপি ছিল। এটি এখন কলম্বোর একটি আদালতের হেফাজতে রয়েছে।

প্রেসিডেন্টের অবস্থান সম্পর্কে তার কার্যালয় থেকে কোনো আনুষ্ঠানিক কিছু বলা হয়নি। তবে তিনি এখনো সশস্ত্র বাহিনীর সর্বাধিনায়ক এবং সামরিক বিষয়গুলো তার নিয়ন্ত্রণাধীন।

একটি শীর্ষ প্রতিরক্ষা সূত্র জানিয়েছে, প্রেসিডেন্টের ঘনিষ্ঠ সামরিক সহযোগীরা নৌবাহিনীর একটি টহলযানে রাজাপক্ষে এবং তার সফরসঙ্গীদের বিদেশে নিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা করছেন।

এর আগে শনিবার রাজাপক্ষে এবং তার সহযোগীদের নৌবাহিনীর একটি নৌযানে উত্তর-পূর্বাঞ্চলের বন্দর শহর ত্রিনকোমালিতে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে সোমবার তাকে হেলিকপ্টারে কলম্বোর আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ফিরিয়ে আনা হয়েছিল।
প্রতিরক্ষা কর্মকর্তাটি বলেন, ‘এখন সবচেয়ে ভালো বিকল্প হলো সমুদ্রপথে প্রস্থান করা। তিনি মালদ্বীপ বা ভারতে যেতে পারেন এবং সেখান থেকে দুবাইয়ের ফ্লাইট পেতে পারেন। ’

আরেকটি বিকল্প হতে পারে দেশের দ্বিতীয় আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর মাত্তালা থেকে উড্ডয়নের জন্য একটি বিমান ভাড়া করা।   গোতাবায়ার ভাই মাহিন্দার তৈরি করা এ বিমানবন্দরটিকে একটি ‘সাদা হাতি’ হিসেবে বিবেচনা করা হয়। এর কোনো নির্ধারিত আন্তর্জাতিক ফ্লাইট নেই। সম্ভবত এটি বিশ্বের সবচেয়ে কম ব্যবহৃত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর।

সাবস্ক্রাইব
Notify of
guest
0 মন্তব্য
Inline Feedbacks
View all comments
Advertisements
সর্বশেষ
- Advertisements -
এ বিভাগে আরো দেখুন