English

27 C
Dhaka
শুক্রবার, নভেম্বর ৭, ২০২৫
- Advertisement -

শীতে নাক বন্ধ, চোখ চুলকায়? সাধারণ সর্দি নয়, হতে পারে অ্যালার্জিক রাইনাইটিস

- Advertisements -
শীতকাল মানেই সর্দি-কাশির মৌসুম। অনেকেই ভাবেন এটি ঋতু পরিবর্তনের স্বাভাবিক ফল। কিন্তু বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করছেন, নাক বন্ধ, চোখে চুলকানি বা অবিরাম হাঁচি যদি দীর্ঘদিন চলতে থাকে, তবে এটি অ্যালার্জিক রাইনাইটিসের লক্ষণ হতে পারে। সময়মতো চিকিৎসা না করলে তা বড় স্বাস্থ্যঝুঁকির কারণ হয়ে উঠতে পারে।

শীতে অ্যালার্জি বাড়ে কেন

শীতকালে বাতাসে ধুলো, পরাগরেণু ও দূষণের পরিমাণ বেড়ে যায়। এগুলোই মূল অ্যালার্জেন, যা শ্বাসনালির প্রদাহ ঘটায়। ফলে নাক দিয়ে পানি পড়া, গলা চুলকানো ও চোখ জ্বালাপোড়ার মতো উপসর্গ দেখা দেয়। বিশেষজ্ঞদের মতে, যারা আগে থেকেই অ্যালার্জিতে ভোগেন বা অ্যাজমা রোগী, তাদের ক্ষেত্রে শীতের এই পরিবর্তন আরো তীব্র প্রভাব ফেলে।

অ্যালার্জিক রাইনাইটিসের লক্ষণ চিনবেন যেভাবে

অ্যালার্জিক রাইনাইটিসে মূলত নাকের ভেতরে প্রদাহ হয়। নিচের উপসর্গগুলো থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত—

  • বারবার হাঁচি হওয়া, বিশেষ করে সকালে।
  • নাক থেকে পাতলা শ্লেষ্মা বা পানি পড়া।
  • নাক বন্ধ হয়ে যাওয়া বা শ্বাস নিতে কষ্ট হওয়া।
  • চোখ, নাক বা গলায় চুলকানি।
  • চোখ লাল হয়ে পানি পড়া।
  • রাতে শ্লেষ্মা জমে কাশি বেড়ে যাওয়া।

চিকিৎসকরা বলেন, এই উপসর্গগুলো সাধারণ ঠাণ্ডার মতো মনে হলেও, দীর্ঘস্থায়ী হলে তা অবহেলা করা বিপজ্জনক।

ঘরোয়া ও কার্যকর প্রতিরোধের উপায়

  • অ্যালার্জেন এড়িয়ে চলুন : আপনার কীসে অ্যালার্জি হয়—ধুলা, পশুর লোম, বা ফুলের পরাগ—তা চিহ্নিত করুন এবং যতটা সম্ভব দূরে থাকুন।
  • বিছানাপত্র পরিষ্কার রাখুন : বালিশ, লেপ, কম্বলে অ্যালার্জেন-ব্লকিং কভার ব্যবহার করুন। সপ্তাহে অন্তত একবার গরম পানিতে চাদর ও বালিশের কভার ধুয়ে নিন।
  • ঘরের বায়ু নিয়ন্ত্রণে রাখুন : এইচইপিএ ফিল্টারযুক্ত এয়ার পিউরিফায়ার ব্যবহার করুন। সকালে ও বিকেলে জানালা-দরজা বন্ধ রাখুন। কারণ এই সময় বাতাসে পরাগরেণুর ঘনত্ব সবচেয়ে বেশি।
  • বাইরে থেকে এলে পোশাক পালটান : বাইরে থেকে ঘরে ঢুকেই জামাকাপড় পাল্টে ফেলুন, সম্ভব হলে গোসল করুন। বাইরে গেলে মাস্ক পরা অভ্যাস করুন।
  • ধূমপান ও গন্ধ এড়িয়ে চলুন : সিগারেটের ধোঁয়া, পারফিউম বা কড়া রাসায়নিক গন্ধ অ্যালার্জি বাড়ায়।
  • নাক পরিষ্কার রাখুন : প্রতিদিন সকালে ও রাতে লবণ পানি দিয়ে নাক পরিষ্কার করুন। এতে জমে থাকা অ্যালার্জেন ও শ্লেষ্মা বেরিয়ে যায়।

কখন ডাক্তার দেখাবেন

প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার পরও যদি নাক বন্ধ, হাঁচি বা চোখের জ্বালাপোড়া কমে না, তবে অবিলম্বে ইএনটি বিশেষজ্ঞ বা অ্যালার্জি চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করুন। অনেকে নিজেরাই দোকান থেকে অ্যান্টিহিস্টামিন বা ন্যাজাল স্প্রে কিনে ব্যবহার করেন—এটি বিপজ্জনক হতে পারে। কারণ ভুল ওষুধে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে বা দীর্ঘমেয়াদি নির্ভরতা তৈরি হয়। চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ওষুধ গ্রহণই সবচেয়ে নিরাপদ উপায়।

জীবনধারায় কিছু পরিবর্তন আনুন

  • নিয়মিত ব্যায়াম করুন ও পর্যাপ্ত ঘুম নিন।
  • পানি বেশি পান করুন—এতে শ্লেষ্মা পাতলা থাকে।
  • ভিটামিন সি ও জিঙ্ক সমৃদ্ধ খাবার খান—এগুলো শরীরের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়।
  • নাক-চোখে হাত দেওয়া থেকে বিরত থাকুন।

শীতে নাক বন্ধ, চোখ চুলকানো বা বারবার হাঁচিকে হালকাভাবে নেবেন না। এটি যদি অ্যালার্জিক রাইনাইটিস হয়, তাহলে প্রাথমিক যত্ন ও সচেতনতা দিয়েই বড় বিপদ এড়ানো সম্ভব। সময়মতো পরীক্ষা ও চিকিৎসা নিলে শ্বাসযন্ত্র ও সাইনাসের দীর্ঘমেয়াদি ক্ষতি থেকেও রক্ষা পাওয়া যায়।

নিজেকে ও পরিবারকে সুরক্ষিত রাখতে এই শীতেই নিন সচেতনতার প্রতিশ্রুতি।

The short URL of the present article is: https://www.nirapadnews.com/69bz
Notify of
guest
0 মন্তব্য
সবচেয়ে পুরাতন
সবচেয়ে নতুন Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments
Advertisements
সর্বশেষ
- Advertisements -
এ বিভাগে আরো দেখুন