English

34 C
Dhaka
রবিবার, মে ৫, ২০২৪
- Advertisement -

সাইকেল চালালেই বাড়বে আয়ু, সারবে নানা রোগ!

- Advertisements -

নিয়মিত সাইকেল চালানোর স্বাস্থ্য উপকারিতা সম্পর্কে সবারই কমবেশি ধারণা আছে। সাইকেল চালানোর মাধ্যমে যেমন শরীরের মেদ-ভুঁড়ি কমানো যায় ঠিক একইভাবে নানা রোগ থেকেও মেলে নিস্তার। প্রতিদিন সাইকেল চালালে যেমন আপনার খরচ বাঁচবে; ঠিক তেমনই শরীর থাকবে সুস্থ।

Advertisements

বিশেষজ্ঞদের মতে, সাইক্লিং একটি দুর্দান্ত ওয়ার্কআউট, যা আপনাকে সক্রিয় রাখে। সাইক্লিং করার মাধ্যমে শরীরের বিপাকক্রিয়া বেড়ে যায় ও পেশি তৈরি হয়।

জেএএমএ ইন্টারনাল মেডিসিন নামক জার্নালে শরীরচর্চা সম্পর্কিত এক গবেষণাপত্রে সম্প্রতি বলা হয়েছে, সাইকেল চালানোর মাধ্যমেই বাড়ানো যায় আয়ু। কারণ নিয়মিত সাইকেল চালালে বিভিন্ন রোগের ঝুঁকি কমে। ফলে আয়ুও বেড়ে যায়!

সাইকেল চালালে কেন আয়ু বাড়ে?

Advertisements

গবেষণাপত্রে বলা হয়েছে, যারা নিয়মিত সাইকেল চালান; তারা ডায়াবেটিস বা হৃদরোগের মতো সমস্যায় কম ভোগেন। ডায়াবেটিস এমন এক অসুখ, যা ধীরে ধীরে আয়ু কমিয়ে দেয়। নিয়মিত সাইকেল চালালে ডায়াবেটিসের প্রভাবে বিভিন্ন রোগের আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি কমে। এর ফলে আয়ু বাড়ে।

গবেষণাপত্র আরও বলছে, শুধু শরীরচর্চা হিসেবে নয়; যারা দৈনিক সাইকেল চালিয়ে চলাফেরা করেন তাদের আয়ু বাড়ে। গবেষণাটি প্রায় ৭০০০ মানুষের উপর করা হয়। যারা প্রত্যেকেই ডায়াবেটিসের সমস্যা ভুগছিলেন। প্রায় ৫ বছর ধরে; তাদের নিয়মিত সাইকেল চালাতে বলা হয়।

পরবর্তীতে দেখা যায়, যারা ৫ বছর ধরে নিয়মিত সাইকেল চালিয়েছেন; তাদের ডায়াবেটিসের মাত্রা অনেক কমে গিয়েছে। সেখান থেকেই বিজ্ঞানীদের মত, ৫ বছর ধরে প্রতিদিন নিয়মিত সাইকেল চালালে ডায়াবেটিসের মাত্রা ৩৫ শতাংশ পর্যন্ত কমে যেতে পারে। তার ফলেই বাড়ে আয়ু।

বিশেষজ্ঞরা জানান, সাইকেল চালানোর পর যখন আপনি বিশ্রাম নিবেন তখনো দেহ ক্যালোরি পোড়াতে ব্যস্ত থাকে। সাইকেল চালালে যেসব রোগের ঝুঁকি কমে তা জেনে নিন-

১. সকালে ঘুম থেকে উঠেই সাইকেল চালালে শরীরের রক্ত সঞ্চালন বেড়ে যাবে। ফলে সারাদিন কাজে মনোযোগী হতে পারবেন। গবেষণায় দেখা গেছে, সকালে সাইক্লিং করলে মেদ কমে, সহনশীলতা বাড়ে, শক্তি ও বিপাকক্রিয়ার উন্নতি ঘটায়।

২. অতিরিক্ত ওজন কমাতে সাইক্লিং এর ভূমিকা অনেক। কোমর ও পেটের মেদ দ্রুত কমানো যায় নিয়মিত সাইকেল চালিয়ে। এমনকি পায়ের শক্তি বাড়াতেও সাইক্লিং বিশেষ কার্যকরী। এতে পায়ের পেশি শক্তিশালী হয়।

৩. মানসিক চাপ দূর করতেও সাইক্লিং উপকারী। কারণ সাইকেল চালানো একটি দুর্দান্ত ওয়ার্কআউট হিসেবে কাজ করে। আর যে কোনো ধরনের শরীরচর্চার ফলেই হ্যাপি হরমোনের সিঃসরণ ঘটে। বিশেষজ্ঞদের মতে, যারা হাতাশায় ভুগেন তারা নিয়মিত সাইকেল চালাতে পারেন।

৪. ক্যানসারে আক্রান্ত ব্যক্তিদের সুস্থতায়ও সাইক্লিং হতে পারে সেরা উপায়। স্তন ক্যানসারসহ বিভিন্ন ক্যানসারের ঝুঁকি কমায় সাইক্লিং। ২০১৯ সালের গবেষণা অনুসারে, স্তন ক্যানসারে আক্রান্তদের কেমো থেরাপির পার্শ্ব-প্রতিক্রিয়া কমায় সাইক্লিং।

৫. ২০১৯ সালের এক গবেষণায় দেখা গেছে, যারা ৬ সপ্তাহ ধরে সকালের নাস্তার আগে সাইক্লিং করেছেন তাদের ইনসুলিনের প্রতিক্রিয়ার উন্নতি ঘটেছিল।

৬. বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে, নিয়মিত সাইকেল চালালে স্ট্রোক, হার্ট অ্যাটাক ও উচ্চ রক্তচাপের মতো কার্ডিয়াক সমস্যা রোধ করা যায়। সাইক্লিং টাইপ-২ ডায়াবেটিসের ঝুঁকিও কমায়।

৭. সাইকেল চালানোর ফলে ভারসাম্য, ভঙ্গি ও মনোযোগ বাড়ে। সাইকেল চালানোর সময় সবার মনোযোগ থাকে ভারসাম্য বজায় রাখা, এতে সামগ্রিক ভারসাম্য, সমন্বয় ও ভঙ্গিমার উন্নতি ঘটে। ফলে হঠাৎ পড়ে গিয়ে ফ্র্যাকচার হওয়ার ঘটনা কম ঘটে।

দৈনিক কতক্ষণ সাইকেল চালাবেন?

বিশেষজ্ঞদের মতে, প্রতিদিন অন্তত আধা ঘণ্টা সাইকেল চালানো ভালো। এতে ২৯৮-৩৭২ ক্যালোরি পর্যন্ত ঝরতে পারে। এই পরিমাণ ক্যালোরি ঝরালে হৃদযন্ত্রও ভালো থাকে।

আপনি যদি সাইকেল চালাতে না পারেন; তাহলে ঘরেই ব্যায়াম করার জন্য এক্সারসাইজ বাইক কিনে নিন কিংবা জিমে গিয়েও নিয়মিত সাইকেল চালাতে পারেন। এতেও ঝরেবে ক্যালোরি আর ফিট থাকবেন আপনি।

আজ বিশ্ব বাইসাইকেল দিবস। জলবায়ু ও স্বাস্থ্যের উপর ইতিবাচক প্রভাবের লক্ষ্যে বিশ্বব্যাপী এই দিবস পালিত হয়। সাইকেল ব্যবহারের মাধ্যমে একটি টেকসই পরিবহনের সমাধান ও উন্নত পরিবেশবান্ধব দেশ গড়ে তোলার লক্ষ্যে প্রতিবছর দিবসটি উদযাপন করা হয় সাইকেল মহড়ার মাধ্যমে।

২০১৮ সালের এপ্রিল মাসে রাষ্ট্রসংঘর সাধারণ সভা ৩ জুন তারিখটিকে বিশ্ব সাইকেল দিবস হিসাবে উদযাপন করতে প্রস্তাব গ্রহণ করেছিলেন। বিশ্ব সাইকেল দিবস সমগ্র বিশ্বে জাতি, বর্ণ, লিঙ্গ, বয়স ভেদে উদযাপন করা হয়।

সাবস্ক্রাইব
Notify of
guest
0 মন্তব্য
Inline Feedbacks
View all comments
Advertisements
সর্বশেষ
- Advertisements -
এ বিভাগে আরো দেখুন