English

31 C
Dhaka
বৃহস্পতিবার, মার্চ ২৮, ২০২৪
- Advertisement -

সড়ক শৃঙ্খলায় এক সেবকের নাম মোস্তফা: ট্রাফিক আইন মানাতে পালন করছেন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা

- Advertisements -

গায়ে ছেড়া কাপড়। পিঠে ঝোলা। হাতি লাঠি। মুখে বাঁশি নিয়ে যানজটের সড়কে রাস্তা পারাপারে পথচারীদের সহযোগিতা করছেন। ঠাকুরগাঁওয়ে মোস্তফা ‘পাগলা’ নামে পরিচিত। এখন কেউ কেউ তাকে ‘ট্রাফিক মোস্তফা’ নামেও ডাকে। বসবাস করেন জেলার ইসলামনগর মহল্লায়।

কয়েক বছর ধরে রোদ-ঝড়, বৃষ্টিকে উপেক্ষা করে সকাল ৯টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত টানা নিজের দায়িত্ব পালন করেন মোস্তফা। এ কাজ করতে গিয়ে অনেক গাড়ি চালকের গালাগাল হাসিমুখে হজম করে নেন। মোস্তফা ইজিবাইক সিরিয়াল করেন, ভারি পরিবহন এলে বাঁশি বাজিয়ে, লাঠি উঁচিয়ে সাবধান করেন এবং শিক্ষার্থী ও পথচারীদের রাস্তা পারাপার হতে সহযোগিতা করেন বলে এলাকাবাসী জানান।

এতে দোকানদার, ইজিবাইকচালক ও ট্রাকচালক খুশি হয় যা অর্থ দেয় তাই দৈনিক আয় মোস্তফার। যা দিন শেষে হিসেব করে দেখা যায় ১’শ টাকারও কম। এই সামান্য আয় দিয়ে এক প্রতিবন্ধী ছেলেসহ সংসার টানতে হয় মোস্তফাকে।

আশরাফুল আলম খোকন, এনিট নাসি, রুহুল আমিনসহ একাধিক পথচারী বলেন, মোস্তফা একায় অনেক কাজ করেন। নি:স্বার্থভাবে মানুষের সেবা করেন তিনি। কিন্তু তিনি তার প্রাপ্য মর্যাদা পান না। মোস্তফা এ কাজ করতে গিয়ে অনেকের গালাগাল শোনে, তাকে মানতে নারাজ অনেক চালক। কিন্তু এটা বোঝার অবকাশ থাকে না যে, মোস্তফা যে কাজটি করছে তা নি:সন্দেহে একটি মহৎ কাজ। আর এ মহৎ কাজের মহৎ প্রতিদান মোস্তফার প্রাপ্য। আমরা চাই মোস্তফাকে আর্থিকভাবে সহযোগিতা করা হোক।

এ বিষয় জানতে চাইলে মুহাম্মদ মোস্তফা বলেন, আমি যা কাজ করি তা দেখে ইজিবাইক চালকরা দুই টাকা করে দেয়, বেশিরভাগই দেয় না। ট্রাক চালকদের কাছ থেকে কখনো কখনো দশ টাকা চাই। বেশি যানজট থাকলে কাজ করতে হয়। অনেক সময় তাদের কাছ থেকে নেওয়ারও সুযোগ হয় না। আমার প্রতিদিন আয় ৭০-৮০ টাকা। তা দিয়ে কোনোরকম একবেলা খেয়ে থাকি। আমার এ কাজটা করতে ভালো লাগে তাই করি। আমার কাজের জন্য যদি কোনো নির্দিষ্ট বেতন ঠিক করা যেত তাহলে আমি অনেক বেশি খুশি হতাম।

স্থানীয়রা বলেন, মোস্তফা সড়কের শৃঙ্খলা ফেরাতে প্রতিদিনই ভূমিকা রাখছে। তাকে প্রশাসনিকভাবে এবং স্থানীয়ভাবে সহযোগিতা করা প্রয়োজন। বিশেষ করে তার কাজকে ছোট করে যারা দেখছে, যারা তাকে মানতে পারছে না বা গালাগাল করছে তাদের বোঝা উচিৎ মোস্তফাদের সংখ্যা সমাজে খুব কম।

মোস্তফা কোনোদিন অসুস্থতার কারণে সেখানে উপস্থিত হতে না পারলে সেখানকার দৃশ্যটায় বদলে যায়। অনেক যানজট সৃষ্টি হয়। মোস্তফা মূলত ট্রাফিক পুলিশসহ আমাদের সবাইকে সহযোগিতা করছে। আমাদের উচিৎ মোস্তফাকেও সহযোগিতা করা।

ঠাকুরগাঁও ট্রাফিক পুলিশের ইনচার্জ মাসুদ লিটন বলেন, মোস্তফা প্রতিনিয়ত ট্রাফিক পুলিশকে সহযোগিতা করে আসছেন। ট্রাফিক আইন মানাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। তাকে আর্থিকভাবে সহযোগিতার বিয়ষটি গুরুত্ব সহকারে দেখা হবে।

সাবস্ক্রাইব
Notify of
guest
0 মন্তব্য
Inline Feedbacks
View all comments
Advertisements
সর্বশেষ
- Advertisements -
এ বিভাগে আরো দেখুন