থাইল্যান্ড-কম্বোডিয়ার সীমান্তে আবারও যুদ্ধের দামামা বেজে উঠেছে। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যস্থতায় স্বাক্ষরিত যুদ্ধবিরতি চুক্তি কার্যত অকার্যকর হয়ে পড়েছে। ফলে দুই দেশের সীমান্তে নতুন করে রক্তক্ষয়ী সংঘাত শুরু হয়েছে।
সোমবার থেকে শুরু হওয়া এই সংঘর্ষে এখন পর্যন্ত সেনা সদস্যসহ বেশ কয়েকজন নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। উভয় দেশই একে অপরের বিরুদ্ধে সহিংসতা শুরুর অভিযোগ এনেছে। জুলাই মাসে প্রথম দফার সংঘর্ষের পর এটিই সবচেয়ে বড় সংঘাতের ঘটনা, যেখানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে থাইল্যান্ড সীমান্তে বিমান হামলাও চালিয়েছে।
গত অক্টোবর মাসে মালয়েশিয়ার কুয়ালালামপুরে ডোনাল্ড ট্রাম্পের উপস্থিতিতে দুই দেশের মধ্যে একটি শান্তিচুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছিল, যা কুয়ালালামপুর পিস অ্যাকর্ড নামে পরিচিত। কিন্তু থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী আনুতিন চার্নভিরাকুল সম্প্রতি জানিয়েছেন, নিরাপত্তা হুমকি না কমায় তারা এই চুক্তি স্থগিত করতে বাধ্য হয়েছেন। এর জের ধরেই ডিসেম্বরে নতুন করে এই সংঘাতের সূত্রপাত।
থাই সেনাবাহিনী দাবি করেছে, কম্বোডিয়ার সেনারা প্রথমে উবন রাচাতানি প্রদেশে হামলা চালায়, যার জবাবে তারা বিমান হামলা শুরু করে। অন্যদিকে নমপেনের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় দাবি করেছে, থাই বাহিনীই প্রথমে প্রিহ ভিহিয়ার প্রদেশে আক্রমণ চালিয়েছে এবং তারা কেবল আত্মরক্ষা করছে।
এই দুই প্রতিবেশী দেশের মধ্যে সীমানা সংক্রান্ত বিরোধ দীর্ঘদিনের। বিশেষ করে ২০০৮ সালে একাদশ শতাব্দীর একটি মন্দিরকে ইউনেস্কো ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইট হিসেবে ঘোষণার পর থেকেই উত্তেজনা চরমে পৌঁছায়।
চলতি বছরের জুলাই মাসের সংঘাতে প্রায় ৪৮ জন নিহত হন। হাজার হাজার মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছিলেন। বর্তমান পরিস্থিতিতে ব্রিটিশ পররাষ্ট্র দপ্তর থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়ার সীমান্ত সংলগ্ন ৫০ কিলোমিটার এলাকার মধ্যে জরুরি প্রয়োজন ছাড়া সব ধরনের ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। বিশ্লেষকদের মতে, দুই দেশের নেতৃত্বের মধ্যে আস্থার সংকট এবং কার্যকর আলোচনার অভাবে এই সংঘাত দ্রুত প্রশমিত হওয়ার সম্ভাবনা ক্ষীণ।
