নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে প্রশাসন থেকে ফ্যাসিবাদের দোসর জঞ্জালদের পরিষ্কার না করলে সারা বাংলাদেশে ঘাপটি মেরে লুকিয়ে থাকা দোসরদের তালিকা প্রকাশ করে দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন বিএনপির চেয়াপারসনের উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল।
আজ শুক্রবার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে অপরাজেয় বাংলাদেশ নামক এক সংগঠনের উদ্যোগে আয়োজিত প্রশাসনে ঘাপটি মেরে থাকা ফ্যাসিবাদের দোসরদের গ্রেপ্তার করে নির্বাচনের সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিত করার দাবিতে যুব সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।
সরকারকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, ‘একটা নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে প্রশাসনের বিভিন্ন স্তর থেকে ফ্যাসিবাদের দোসর জঞ্জালদের যদি পরিষ্কার না করেন, বঙ্গভবন-ইউনিয়ন পরিষদ, গণভবন-সিটি করপোরেশনের ওয়ার্ড পর্যন্ত সব জায়গায় ঘাপটি মেরে লুকিয়ে থাকা এ ফ্যাসিবাদের দোসরদের তালিকা প্রকাশ করে দিব। সেই তালিকা জনসম্মুখে সাংবাদিকদের দিব। দেয়ালে দেয়ালে টাঙিয়ে দিব সারা বাংলাদেশে।’
তিনি আরও বলেন, ‘কারা ফ্যাসিবাদের দোসর, কারা এখনো ঘাপটি মেরে দুর্নীতি করছেন, মানুষের অধিকার বঞ্চিত করছেন এবং যেখানে খুশি সেখানে ফ্যাসিবাদের দোসরদের পুনর্বাসন করার চেষ্টা করছেন। সুতরাং সাবধান হয়ে যান। আমাদেরকে যাতে সেই শ্বেতপত্র প্রকাশ করতে না হয়। আমাদেরকে যাতে সেই তালিকা দিতে না হয়। জুলাই-আগস্ট বিপ্লব পালনের সঙ্গে সঙ্গে যদি এ দাবি (ফ্যাসিবাদের দোসরদের গ্রেপ্তার করে নির্বাচনের সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিত) না হয়, তাহলে আমরা সত্যিকার অর্থে সেই তালিকা প্রকাশ করে দেব। ফ্যাসিবাদের দোসররা কোথায় এবং কোন পর্যায়ে রয়েছেন। আপনাকে সহায়তা করতে বিএনপি অঙ্গীকারবদ্ধ। তার অর্থ এই নয়, যা খুশি তা করবেন। আর সবকিছু আমরা সমর্থন দিয়ে যাব।’
মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল বলেন, ‘আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত হয়ে গেছে এ সরকারের প্রশাসনের রন্ধ্রে রন্ধ্রে এখনো ফ্যাসিবাদের দোসররা দাপটের সঙ্গে রয়ে গেছে। মা-বোন, সন্তান হারিয়ে যাওয়া পরিবারগুলোকে তারা এখনো হুমকি দিচ্ছেন। গুম-খুন হওয়া পরিবারগুলোকে আইনের দারস্থ হতে বাধা দিচ্ছে।’
মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল বলেন, ‘ডেঙ্গু, করোনা, চিকুনগুনিয়া ব্যাপক আকারে ছড়িয়ে পড়ছে। কোথায় আপনাদের স্বাস্থ্য উপদেষ্টা। কোথায় তার কর্মতৎপরতা। বাজারে গেলে মানুষ তার পকেটে হাত দিতে পারে না। মনে হয় পকেট ছিদ্র হয়ে সবকিছু পড়ে গেছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আজকে আমরা বারবার করে বলেছি, তারেক রহমান আমাদেরকে বলেছেন—জনগণের সঙ্গে থাকুন এবং জনগণকে সঙ্গে রাখুন। আমরা জনগণের পাশে আছি বলেই নির্বাচনের কথা বলি। নির্বাচনের কথা বললেই আপনারা (উপদেষ্টা পরিষদ) গোসসা করেন। গোসসা করাটা তো ঠিক নয়। একজন নির্বাচিত প্রতিনিধির কাছে মানুষ যখন-তখন যেতে পারে। যখন-তখন সময় কৈফিয়ত চাইতে পারে। কিন্তু, আপনাদের (উপদেষ্টা পরিষদ) কাছে যাওয়ার সেই সুযোগটা নেই। যেটুকু আছে, সেখানেও মাঝখানে দেয়াল তৈরি করে রেখেছে স্বৈরাচারের দোসররা।’
বিএনপির এ নেতা বলেন, ‘আমরা পরিষ্কারভাবে বলতে চাই—নির্বাচন হচ্ছে একটি গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া। একটা নতুন প্রজন্ম ২০১৪, ১৮ এবং ২৪ সালে নিজেদের অধিকার প্রদর্শন করতে পারেনি। তারা মুখিয়ে আছে একটি নিরপেক্ষ নির্বাচনে ভোট দেওয়ার জন্য। তাদের অধিকার প্রতিষ্ঠা করার জন্য মূলত আমরা নির্বাচনের কথা বলি।’
আয়োজক সংগঠনের সহ-সভাপতি এম এ আজাদ চয়নের সভাপতিত্বে যুব সমাবেশে আর বক্তব্য দেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট আব্দুস সালাম আজাদ, নির্বাহী কমিটির সদস্য আবু নাসের মো. রহমতুল্লাহ, যুবদল নেতা জাহাঙ্গীর, জাহিদ হোসেন ও সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক ইসমাইল হোসেন সিরাজী।