সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে দেশ-বিদেশের শিল্পীদের অভিনব সব পরিবেশনা তুলে ধরছে অনলাইন সংগীতানুষ্ঠান ‘কোক স্টুডিও বাংলা’। তারই ধারাবাহিকতায় এবার এলো বাংলা ও লাটিন জ্যাজ সংগীতের মিশ্রণে তৈরি তানযীর তুহীনের গান ‘ক্যাফে’। এমন একটি পরিবেশনায় এবারই প্রথম দেখা মিলল আভাস ব্যান্ডের এই কণ্ঠশিল্পীর। ফিউশনধর্মী এ আয়োজনে তানযীর তুহীনের সহশিল্পী হিসেবে আছেন ব্রাজিলিয়ান শিল্পী লিভিয়া মাতোস এবং গৌরব চ্যাটার্জি।
আয়োজকদের জানান, ‘ক্যাফে’ কোক স্টুডিও বাংলার তৃতীয় সিজনের সপ্তম গান। শুভেন্দু দাস শুভর সংগীতায়োজনে, এই গানে স্থান পেয়েছে এফ্রা-কিউবান জ্যাজ, লাতিন সালসা ও বাংলা পঙ্ক্তি। একাধিক সংস্কৃতির মিশ্রণে তারা সবাই মিলে সৃষ্টি করেছেন প্রাণবন্ত এক সংগীত, যেখানে উদযাপিত হয়েছে ঐতিহ্য, আবেগ ও বৈশ্বিক সুরের মেলবন্ধন।
কিছুদিন আগে ‘কোক স্টুডিও বাংলা’ তাদের চ্যানেলে উন্মুক্ত করেছেন হাবিব ওয়াহিদ ও তাজিকিস্তানের আলোচিত শিল্পী মেহরনিগরি রুস্তমের ফিউশনধর্মী গান ‘মহাজাদু’; যা অল্প সময়ের সংগীতপ্রেমীদের মনোযোগ কেড়ে নিয়েছে। ‘মহাজাদু’ গানে বাংলা লোক গানের সঙ্গে ফরাসি কথা ও সুরের এই মিশ্রণ নিয়ে এখনও দর্শক-শ্রোতাদের আলোচনা চলছেই। এই গানের রেশ কাটতে না কাটতেই এবার তুলে ধরা হলো ফিউশনের আরেকটি ব্যতিক্রমী আয়োজন।
আয়োজকদের কথায়, ‘মহাজাদু’ যেমন ফিউশনে নতুন এক ব্যঞ্জনা নিয়ে এসেছে, একইভাবে ‘ক্যাফে’ গানেও দর্শক-শ্রোতা পাবেন, সময়কে ছাপিয়ে যাওয়ার নতুন এক শব্দ সংযোজনা। তানযীর তুহীনের মনের গহিনে নাড়া দেওয়া কণ্ঠ আর শুভেন্দুর হৃদয় ছুঁয়ে যাওয়া সুরে প্রাণ পেয়েছে গানটি। এর সঙ্গে আছে গাবুর ছন্দের ঐতিহ্য ও অ্যাকর্ডিয়ানে তোলা লিভিয়ার জাদুকরি মেলোডি। সব মিলিয়ে এটি হয়ে উঠেছে এক অনন্য সংগীতযাত্রা; যার শিকড় গাঁথা এডি পালমেরি ও মহীনের ঘোড়াগুলির সুরেলা গল্পে। বাংলা ও লাতিন জ্যাজের এ এক অপূর্ব সংমিশ্রণ, যেখানে আমরা খুঁজে পাই স্বস্তি। এটি শুধু একটি অনুভূতি বা গান নয়, এটি হৃদয় ও স্মৃতির মাঝে গড়ে ওঠা এক আবেগ, যেখানে জীবনের রিয়েল ম্যাজিক ধরা দেয় একটি মুহূর্তে, আরেকটি মনে রাখার মুহূর্তে।
কোক স্টুডিও বাংলার এই আয়োজনে অংশ নেওয়া শিল্পী ও সংগীতায়োজকদের কথায়, ‘ক্যাফে’তে বিশেষ কিছু একটা আছে; যা একটি অতিসাধারণ দিনকেও গল্পে পরিণত করে। সময় যেন থমকে যায়, কণ্ঠস্বর নিচু হয়ে আসে আর প্রতিটি টেবিল বলতে থাকে তাদের নিজেদের গল্প। কারও প্রথম দেখা, কারও শেষ বিদায়। কেউ আবার চুপচাপ বোঝার চেষ্টা করছে, নীরবতা আসলে কী। মানুষ আসে, আবার চলেও যায়, তবু কি যেন সবসময় থেকে যায়। ছেঁড়া পাতার স্মৃতির মতো, কফির কাপে হাসির ঝলকানির মতো। এটাই হলো এ গানের গল্প, যা সংগীতের মোড়কে নতুনভাবে তুলে আনা হয়েছে। গানটি দীর্ঘদিন শ্রোতা মনে অনুরণন তুলে যাবে বলেও আশা প্রকাশ করেছেন শিল্পী ও সংগীতায়োজকরা।
এদিকে ‘কোক স্টুডিও বাংলা’র ফিউশনধর্মীতে অংশ নেওয়ার পাশাপাশি শিল্পী তানযীর তুহীন ব্যস্ত সময় পার করছেন নতুন গানের আয়োজন ও তাঁর ব্যান্ড আভাসের স্টেজ শো নিয়ে। চলতি বছরের শেষ প্রান্তে এবং আগামী বছরের শুরুর দিকে তাঁর এবং আভাস ব্যান্ডের বেশ কিছু নতুন গান প্রকাশ পাবে বলেও তুহীন জানান।
