সম্প্রতি ইউক্রেনে পুর্ণমাত্রার আক্রমণ শুরু করেছে রাশিয়া। এ ঘটনার পর থেকেই বেশ নড়েচড়ে বসেছে জার্মান প্রশাসন।
এরই মধ্যে প্রতিরক্ষা সক্ষমতা জোরদার করতে জার্মানির সংসদ বুন্ডেসটাগ ১৮ বছর বয়সীদের জন্য স্বেচ্ছাসেবী সামরিক সেবা উদ্যোগকে অনুমোদন দিয়েছে।
এটি দেশটির সামরিক নীতিতে বড় ধরনের পরিবর্তন আনছে এবং চ্যান্সেলর ফ্রিডরিখ মের্ৎসের ‘ইউরোপের সবচেয়ে শক্তিশালী সেনাবাহিনী’ গড়ার পরিকল্পনার অংশ।
নতুন নিয়ম অনুযায়ী, ২০২৬ সালের জানুয়ারি থেকে জার্মানির সব ১৮ বছর বয়সীদের কাছে একটি বাধ্যতামূলক প্রশ্নপত্র পাঠানো হবে, যাতে তারা সামরিক বাহিনীতে যোগ দিতে আগ্রহী কি না তা জানাতে হবে। পুরুষদের জন্য প্রশ্নপত্রটি বাধ্যতামূলক হলেও নারীদের জন্য এটি ঐচ্ছিক।
শুক্রবার জার্মানির প্রায় ৯০টি শহরে শিক্ষার্থীরা এই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে ধর্মঘটের ঘোষণা দিয়েছে। দেশটির বহু তরুণ নতুন আইনটির বিরোধিতা করছেন।
আন্দোলনকারীরা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে লিখেছেন— আমরা আমাদের জীবনের ছয় মাস ব্যারাকে কাটাতে চাই না, যেখানে আমাদের মিলিটারি ড্রিল ও হত্যার প্রশিক্ষণ নিতে হবে। যুদ্ধ আমাদের ভবিষ্যৎ ধ্বংস করে, কোনও সম্ভাবনা তৈরি করে না।
ধারণা করা হচ্ছে, দেশটির হামবুর্গ শহরেই ১,৫০০ মানুষ বিক্ষোভে অংশ নেবে। স্কুল কর্তৃপক্ষ অভিভাবকদের অনুরোধ করেছেন যাতে শিক্ষার্থীরা ক্লাস বর্জন না করে।
বুন্ডেসটাগে ৩২৩–২৭২ ভোটে আইনটি পাস হয়। এতে জার্মানি ইউরোপের আরও বেশ কিছু দেশের মতো সামরিক সেবা পুনর্বিন্যাসে যোগ দিল। গত মাসে ফ্রান্স ঘোষণা করেছে, সেখানে ১৮ ও ১৯ বছর বয়সীদের জন্য ১০ মাসের স্বেচ্ছামূলক সামরিক প্রশিক্ষণ চালু হবে।
জার্মান প্রতিরক্ষামন্ত্রী বরিস পিস্টোরিয়াস বলেন, ২০২৭ সাল থেকে সব ১৮ বছর বয়সী পুরুষকে চিকিৎসা পরীক্ষার আওতায় আনা হবে যাতে জরুরি পরিস্থিতিতে দ্রুত বোঝা যায় কারা সামরিক অভিযানে সক্ষম।
বর্তমানে জার্মান সেনাবাহিনী বুন্ডেসভেয়ারে প্রায় এক লাখ ৮২ হাজার সৈন্য রয়েছে। আগামী এক বছরে ২০,০০০ নতুন সৈন্য যুক্ত করা এবং ২০৩০-এর দশকের শুরুতে সেনাবাহিনীর সদস্য সংখ্যা দুই লাখ ৬০ হাজারে–এ উন্নীত করা সরকারের লক্ষ্য। পাশাপাশি প্রায় দুই লাখ রিজার্ভ ফোর্স রাখা হবে বলে জানিয়েছে দেশটির প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়।
