English

26.3 C
Dhaka
মঙ্গলবার, আগস্ট ৫, ২০২৫
- Advertisement -

স্কুল বন্ধ করে বিয়ের অনুষ্ঠান, এলাকাজুড়ে ক্ষোভের সৃষ্টি

- Advertisements -

বরিশালে পাঠদান বন্ধ রেখে স্কুল মাঠে মেয়ের বিয়ের অনু্‌ষ্ঠানের আয়োজন করেছেন ইয়ার হোসেন সিকদার নামে এক মৎস্য ব্যবসায়ী। আর পুরো অনুষ্ঠান পরিচালনা ও অভ্যর্থনার দায়িত্বে রয়েছেন এক প্রভাবশালী নেতা। এই ঘটনায় এলাকাজুড়ে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। শিক্ষা কর্মকর্তা বলছেন স্কুল মাঠে বিয়ে করানোর জন্য কোনো অনুমতি দেয়া হয়নি কাউকে।

নগরীর আমানতগঞ্জ এলাকার মোফাজ্জেল হোসেন খান বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও মোফাজ্জেল হোসেন খান সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে বিয়ের আয়োজন করা হয়। পাশাপাশি প্রায় দেড় হাজার মানুষের খাওয়ার ব্যবস্থাও করা হয়েছে।
জানা গেছে, বরিশাল পোর্ট রোড মৎস্য আড়তদার এসোসিয়েশনের কোষাধ্যক্ষ ইয়ার হোসেন সিকদারের মেয়ে সাবরিনা আক্তার সমির সঙ্গে পশ্চিম চরহোগলা এলাকার আবুল হোসেনের ছেলে বিকাশ আহম্মেদ বাপ্পীর বিয়ে ঠিক হয়। বিয়ের আনুষ্ঠান ও প্রীতি ভোজের আয়োজন করা হয় মোফাজ্জেল হোসেন খান বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও মোফাজ্জেল হোসেন খান সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে শিক্ষার্থীদের পাঠদান বন্ধ রেখে।

সরজমিন গিয়ে স্কুল মাঠে বিশাল প্যান্ডেল, সাউন্ড বক্সের উচ্চ শব্দ আর রান্না শেষে বাবুর্চিদের বিশ্রাম নেয়ার চিত্র দেখা গেছে।

ব্যস্ততা দেখা গেছে যারা খাবার পরিবেশন করবে তাদের মাঝেও। পাশাপাশি স্কুলের কয়েকটি শ্রেণিকক্ষেও করা হয়েছে খাবার পরিবেশনের ব্যবস্থা।

স্থানীয়রা নাম না প্রকাশের শর্তে বলেন, স্কুলের শিক্ষার্থীদের তড়িঘড়ি করে ছুটি দিয়ে দেয়া হয়েছে। সকাল থেকেই গান বাজনা চলছে এখানে। এত কমিউনিটি সেন্টার থাকতে স্কুল মাঠে কেন বিয়ের অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে প্রভাব খাটিয়ে এমন কর্মকাণ্ড করা উদ্বেগজনক। স্কুলের শিক্ষার্থীরা জানান, সকালেই শিক্ষকরা তাদের বাসায় পাঠিয়ে দিয়েছেন। ইয়ার হোসেন সিকদার বলেন, স্কুল ম্যানেজিং কমিটির অনুমতি নিয়ে বিয়ে অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছি। এখানে প্রায় দেড় হাজার লোককে নিমন্ত্রণ করা রয়েছে।

মোফাজ্জেল হোসেন খান বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক গাজী হারুন অর রশিদ বলেন, সামাজিক দায়বদ্ধতার জায়গা থেকে আমরাও কিছু বলিনি বিয়ের অনুষ্ঠান আয়োজন করায়। মোফাজ্জেল হোসেন খান সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক অর্চনা রানী বণিক তার স্কুলে সকাল থেকে ক্লাস হয়েছে বলে দাবি করেছেন।

বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি আশরাফুজ্জামান খান রনি বলেন, সামাজিক কাজ করতে হয় অনেক। এরমধ্যে এটাও একটা। মেয়ের পরিবার গরিব হওয়ায় আমরা অনুমতি দিয়েছি বিয়ের অনুষ্ঠান করার। ক্লাস পুরোপুরি বন্ধ করা হয়নি। সকালে ৩টা ক্লাস হয়েছে।

বরিশাল জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আব্দুল লতিফ মজুমদার বলেন, বিয়ের অনুষ্ঠান করার জন্য আমাদের কাছে অনুমতি চাওয়া হয়েছিল কিন্তু আমরা অনুমতি দেইনি। স্কুল চলাকালীন সময়ে স্কুল মাঠে বিয়ের আয়োজন করা বিধান পরিপন্থি।
জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর হোসাইন বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই।

খোঁজ নিয়ে দেখছি। তাছাড়া স্কুল মাঠে ক্লাস চলাকালীন সময় বিয়ের অনুষ্ঠান করার তো কোনো যুক্তিই নেই। আমাদের কাছ থেকে কেউ কোনো অনুমতি নেয়নি।

বরিশাল মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের পরিদর্শক রফিকুল ইসলাম খান বলেন, বিদ্যালয় মাঠে বিয়ের আয়োজন করা আইন পরিপন্থি। এই কাজ করা অপরাধ। খোঁজ নিয়ে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। বরিশালের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) সোহেল মারুফ বলেন, পাঠদান বন্ধ রেখে বিয়ের অনুষ্ঠান করাটা অপরাধ। আমি খোঁজ নিয়ে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণের চেষ্টা করবো।

The short URL of the present article is: https://www.nirapadnews.com/uq33
Notify of
guest
0 মন্তব্য
সবচেয়ে পুরাতন
সবচেয়ে নতুন Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments
Advertisements
সর্বশেষ

আল কোরআন ও আল হাদিস

- Advertisements -
এ বিভাগে আরো দেখুন