English

25.8 C
Dhaka
রবিবার, অক্টোবর ১২, ২০২৫
- Advertisement -

বিশ্ব ডিম দিবস ২০২৫ উপলক্ষ্যে বিএলআরআইতে বর্ণাঢ্য আয়োজন

- Advertisements -

সালাম মাহমুদ: বাংলাদেশ প্রাণিসম্পদ গবেষণা ইনস্টিটিউট (বিএলআরআই) এবর্ণাঢ্য আয়োজনে পালিত হয় বিশ্ব ডিম দিবস ২০২৫। ইনস্টিটিউটের পোল্ট্রি রিসার্চ সেন্টারের আয়োজনে এবং পোল্ট্রি গবেষণা ও উন্নয়ন জোরদারকরণ প্রকল্পের অর্থায়নে পালিত হয় বিশ্ব ডিম দিবস।

বেলা ০৩.৩০ ঘটিকায় বিশ্ব ডিম দিবস উপলক্ষ্যে আয়োজিত হয় বর্ণাঢ্য একটি র্যা লি। উক্ত র্যা লিতে বিএলআরআই এর মহাপরিচালক ড. শাকিলা ফারুক মহোদয়ের নেতৃত্বে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর ও বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি সংস্থার প্রতিনিধিগণের সাথে সাথে বিএলআরআই-এর সর্বস্তরের বিজ্ঞানী, কর্মকর্তা ও কর্মচারীগণ অংশগ্রহণ করেন।র্যাথলিটি বিএলআরআই-এর পোল্ট্রি রিসার্চ সেন্টার প্রাঙ্গন থেকে শুরু হয়ে বিএলআরআই এর অভ্যন্তরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে।

র‌্যালি শেষে বিএলআরআই-এর পোল্ট্রি রিসার্চ সেন্টার (পি আর সি) সংলগ্ন ফটক এলাকায় পথচারী ও দুঃস্থদের মধ্যে ডিম বিতরণ করা হয়।

বিকাল ০৪.০০ ঘটিকায় বিএলআরআই-এর চতুর্থ তলার সম্মেলন কক্ষে বিশ্ব ডিম দিবস উপলক্ষ্যে সেমিনার ও আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। উক্ত আলোচনায় সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেনবিএলআরআই এর মহাপরিচালক ড. শাকিলা ফারুক মহোদয়। এছাড়াও বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের আওতাধীন বাংলাদেশ জাতীয় চিড়িয়াখানার উপপরিচালক বেগমমানছুরাহাছিন। এছাড়াও আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিএলআরআই এর সাবেক মহাপরিচালক ও কৃষি গবেষণা ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক ড. নাথু রাম সরকার। আর আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ও পোল্ট্রি রিসার্চ সেন্টারের দপ্তর প্রধান এবং পোল্ট্রি গবেষণা ও উন্নয়ন জোরদারকরণ প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক ড.মো. সাজেদুল করিম সরকার।

পবিত্র কোরআন থেকে তিলওয়াতের মধ্য দিয়ে সেমিনার ও আলোচনা অনুষ্ঠান শুরু হয়। অনুষ্ঠানের শুরুতেই আমন্ত্রিত অতিথিদের উদ্দেশ্যে স্বাগত বক্তব্য রাখেন বিএলআরআই এর প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ও ডেইরি রিসার্চ সেন্টারের দপ্তর প্রধান ড. মোঃরাকিবুলহাসান।

স্বাগত বক্তব্যের পরে “Nutritional Properties of Eggs for Building a Healthy Nation” শীর্ষক মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ড. মো. সাজেদুল করিম সরকার। এসময় তিনি তার উপস্থাপনায় বিশ্ব ডিম দিবস পালনের ইতিহাস, তাৎপর্য ও গুরুত্ব, ডিম খাওয়ার উপকারিতা ও গুরুত্বএবং বাংলাদেশের পোল্ট্রি শিল্প ও ডিম উৎপাদনের অতীত ও বর্তমান অবস্থা তুলে ধরেন।

মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনের পরে অনুষ্ঠিত হয় বিশেষজ্ঞ আলোচনা পর্ব। এসময় আলোচনায় অংশ নেনপোল্ট্রি বিশেষজ্ঞ ড. নাথু রাম সরকার। তিনি তার বক্তব্যে বলেন, ডিম দিবস পালনের উদ্দেশ্য দুইটি। একটি হলো ডিমের উপকারিতা সম্পর্কে সকলকে জানানো, আর দ্বিতীয় হলোডিম উৎপাদকদের উৎসাহিত করা, সরকারি বিভিন্ন সুযোগ পাওয়ার সম্ভবনা তৈরি করা। বিগত বছরগুলোতে ডিমের উৎপাদন উল্লেখযোগ্য হারে বাড়লেও, আমাদের ভবিষ্যৎ চাহিদা পূরণের ডিমের উৎপাদন আরও বাড়াতে হবে। এজন্য ডিমের উৎপাদর খরচ কমানোর লক্ষ্যে পোল্ট্রি ফিড তৈরির বিকল্প উৎস্য খুঁজতে হবে। পাশাপাশি গবেষণার মাধ্যমে দেশীয় আবহাওয়া উপযোগী অধিক ডিম উৎপাদশীল মুরগির জাত উদ্ভাবন করতে হবে।

বিশেষজ্ঞ আলোচনা পর্বের পরে অনুষ্ঠিত হয় উন্মুক্ত আলোচনা এসময় আলোচকগণ ডিমের উৎপাদন বাড়ানোয় গুরুত্ব আরোপের পাশাপাশি ডিম হতে ভ্যালু অ্যাডেড প্রোডাক্ত উৎপাদন ও প্রোডাক্ট ডাইভারসিফিকেশন বৃদ্ধির লক্ষ্যে গবেষণা কার্যক্রম গ্রহণে জোরালো ভূমিকা রাখার আহ্বান জানান।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বেগমমানছুরাহাছিন বলেন, ডিম মানে জীবন। ডিম তাই একটি কমপ্লিট ফিড। মুরগির শরীরে থাকা সব পুষ্টি উপাদানই ডিমের মধ্যে আসে বলে পোল্ট্রির ফিড প্রিপারেশনের উপরেই ডিমের পুষ্টি নির্ভর করে। তাই এ বিষয়ে আমাদের গুরুত্ব দিতে হবে। প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরও পোল্ট্রির ফিড কস্টিং কমানোর লক্ষ্যে এবং দেশে পোল্ট্রি খাদ্যের অন্যতম উপাদান ভুট্টার চাষ বৃদ্ধির লক্ষ্যে কাজ করে চলেছে।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ড. শাকিলা ফারুক বলেন, মেধাবী ও বৃদ্ধিদৃপ্ত জাতি গঠনে প্রাণিজ আমিষ, তথা ডিমের বিকল্প নেই। প্রোটিনের অন্যান্য উৎস্যের সাথে তুলনামূলক বিশ্লেষণ করলে দেখা যায় ডিম হলো প্রোটিন ও পুষ্টির সাশ্রয়ী উৎস্য। ডিমে এলডিএল অনেক কম থাকে এবং এইচডিএল বেশি থাকে বলে ডিমের স্বাস্থ্য ঝুঁকিও অনেক কম। ডিম নিয়ে অনেক ভ্রান্ত ধারণা আছে, যা আসলে অমূলক। আমাদের উচিৎ এসকল অপপ্রচারকে আমলে না নিয়ে ডিমের পুষ্টিগুণ বিচার করে দৈনিক অন্তত একটি করে ডিম খাওয়া।

প্রধান অতিথির বক্তব্য শেষে অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত অতিথি ও আয়োজকগণকে ধন্যবাদ জানান প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ও বিএলআরআই আঞ্চলিক কেন্দ্র, রাজশাহী এর স্টেশন ইনচার্জ ড. মোহাম্মদআব্দুররশিদ।

এছাড়াও ডিম দিবস উপলক্ষ্যে বিকেলে সাভারের গেরুয়ায় অবস্থিত মাদ্রাসা ও এতিমখানার সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের মধ্যেও ডিম বিতরণ করা হয়।

ডিমের পুষ্টিগুণ ও গুরুত্ব সম্পর্কে জনসচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে আন্তর্জাতিক সংস্থা ইন্টারন্যাশনাল এগ কমিশন (আইইসি) ১৯৯৬ সালে অস্ট্রিয়ার রাজধানী ভিয়েনায় প্রথম ‘বিশ্ব ডিম দিবস’ পালনের আয়োজন করে, যা পরবর্তী সময়ে প্রতি বছর অক্টোবর মাসের দ্বিতীয় শুক্রবার পালিত হয়ে আসছে। বিশ্বের অপরাপর দেশের মতো বাংলাদেশ তথা বাংলাদেশ প্রাণিসম্পদ গবেষণা ইনস্টিটিউটও দিবসটি পালন করে আসছে। এবছর ডিম দিবসের প্রতিপাদ্য নির্ধারণ করা হয়েছে “ডিমে আছে প্রোটিন, খেতে হবে প্রতিদিন”।

The short URL of the present article is: https://www.nirapadnews.com/xzwh
Notify of
guest
0 মন্তব্য
সবচেয়ে পুরাতন
সবচেয়ে নতুন Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments
Advertisements
সর্বশেষ
- Advertisements -
এ বিভাগে আরো দেখুন