ইমরান খানকে ঘিরে আবারও উত্তেজনা ছড়াচ্ছে পাকিস্তানে। এবার সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়া খবর আর পুলিশ ও কর্তৃপক্ষের রহস্যজনক আচরণ ঘিরেই উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে পরিস্থিতি। আসল ঘটনা কি, কি ঘটছে পর্দার আড়ালে, তার সঠিক কোনো হদিস নেই।
তবে সময়ের সাথে পাল্লা দিয়ে ঘটনা জট পাকাচ্ছে। ইমরান খানের পরিবার ও তার দলের অভিযোগের সুস্পষ্ট কোনো জবাবও দিচ্ছে না পাকিস্তানের বর্তমান প্রশাসন।
এক মাসেরও বেশি সময় ধরে সাবেক পাকিস্তানি প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের সঙ্গে দেখা করার ওপর অঘোষিত নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে পাকিস্তান সরকার। এরই মধ্যে সোশ্যাল মিডিয়ায় তার মৃত্যুর ভুয়া খবরও ছড়িয়ে পড়ায় উদ্বেগ আরও বেড়েছে।
কারাবন্দী ইমরান খান মারা গেছেন এমন গুজবের মধ্যেই তার তিন বোন অভিযোগ করেছেন, কারা কর্তৃপক্ষের কাছে ভাইয়ের সঙ্গে দেখা করার দাবি জানানোয় পুলিশ তাঁদের উপর নির্মম অত্যাচার করেছে।
ইমরান খানের নওরীন খান, আলিমা খান এবং উযমা খান দাবি করেছেন, এই সপ্তাহে তারা পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) সমর্থকদের নিয়ে রাওয়ালপিন্ডির আদিয়ালা জেলের বাইরে জড়ো হন। কর্তৃপক্ষকে তাদের ভাইয়ের সঙ্গে দেখা করার অনুমতি দিতে বললে পুলিশ তাদের উপর চড়াও হয় এবং মারধর করে।
২০২৩ সাল থেকে ইমরান খান আদিয়ালা জেলে বন্দি আছেন। তার বোনেরা অভিযোগ করেছেন, তিন সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে তাদের ভাইকে দেখতে দেওয়া হয়নি।
পিটিআই জানিয়েছে, যখন তার বোনেরা ও সমর্থকরা জেলের বাইরে বসেছিলেন, তখন পুলিশ কর্মীরা তাদের ওপর হামলে পড়ে।
পাঞ্জাব পুলিশের প্রধান উসমান আনোয়ারকে লেখা এক চিঠিতে ইমরান খানের বোনেরা বলেছেন যে এই সহিংসতা ছিল বিনা প্ররোচনায় পুলিশকর্মীদের সংঘটিত বর্বর ও সাজানো হামলা।
নওরীন নিয়াজী বলেছেন, আমরা তাঁর স্বাস্থ্যের বিষয়ে উদ্বেগে শান্তিপূর্ণভাবে প্রতিবাদ করছিলাম। আমরা রাস্তা অবরোধ করিনি, জনসাধারণের চলাচলে বাধা দিইনি বা কোনো বেআইনি আচরণে লিপ্ত হইনি। তবুও, কোনো সতর্কতা বা প্ররোচনা ছাড়াই রাস্তার আলো হঠাৎ নিভিয়ে দেওয়া হয়। এরপরেই পাঞ্জাব পুলিশ বর্বর হামলা চালায়।
তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করেন, ৭১ বছর বয়সে, আমাকে চুল ধরে টেনে নিয়ে যাওয়া হয়, হিংস্রভাবে মাটিতে ফেলে দেওয়া হয়, শরীরে আঘাতের চিহ্ন স্পষ্ট। তিনি আরও বলেন, জেলের বাইরে উপস্থিত অন্যান্য মহিলাদের চড় মারা হয়েছে এবং টেনে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
বোনেরা দাবি করেছেন, আইজিপি পাঞ্জাব যেন অবিলম্বে এই বর্বর হামলার সঙ্গে জড়িত সকল পুলিশ কর্মীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করেন।
ইমরানের আইনি দলের সঙ্গে যুক্ত একজন আইনজীবী সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, বই, প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র এবং এমনকি তার আইনজীবীদের প্রবেশও বন্ধ করা হচ্ছে। আইনজীবী খালিদ ইউসুফ চৌধুরী বলেছেন, এখানে জঙ্গলের আইন প্রচলিত, যেখানে কেবল যে পশুর শাসন চলে, তার অধিকার আছে। আর কারও কোনো অধিকার নেই।
এমনকি খাইবার পাখতুনখাওয়ার মুখ্যমন্ত্রী সোহেল আফ্রিদিকেও খানের সঙ্গে দেখা করার অনুমতি দেওয়া হয়নি। আফ্রিদি সাতবার তার সঙ্গে দেখা করার চেষ্টা করেছিলেন, কিন্তু জেল কর্তৃপক্ষ তাকে অনুমতি দেয়নি। খান দাবি করেন, এই কর্তৃপক্ষ সেনাবাহিনীর একজন কর্মকর্তার নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।
