কুমিল্লার হোমনায় মাইকে ঘোষণা দিয়ে চারটি মাজারসহ কয়েকটি বাড়ি-ঘরে হামলা, ভাঙচুর ও আগুন দেওয়ার ঘটনায় তিতাস থানায় মামলা রুজু হয়েছে। এতে অজ্ঞাতনামাসহ ২২০০ জনকে আসামি করা হয়েছে।
গতকাল বৃহস্পতিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) রাতে হোমনা থানার এসআই তাপস কুমার সরকার বাদী হয়ে গ্রামের ২ হাজার ২০০ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। আজ শুক্রবার (১৯ সেপ্টেম্বর) দুপুরে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন হোমনা থানার ওসি মুহাম্মদ রফিকুল ইসলাম।
এদিকে, ফেসবুকে আপত্তিকর ওই পোস্টকে কেন্দ্র করে গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল থেকে এলাকার বিক্ষুব্ধ জনতা মাইকে ঘোষণা দিয়ে আছাদপুর গ্রামে কফিল উদ্দিন শাহ ও হাওয়ালি শাহ মাজারে আগুন এবং কালাই শাহ ও আবদু শাহ মাজারে হামলা এবং ভাঙচুর চালায়। আগুন আশপাশের কিছু ঘরেও ছড়িয়ে পড়ে।
খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের দুটি ইউনিট ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। ঘটনার পর পুলিশ ও সেনাবাহিনী ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।
আজ শুক্রবার (১৯ সেপ্টেম্বর) সকালে সরেজমিন গিয়ে দেখা গেছে, মামলা ও গ্রেপ্তার আতঙ্কে পুরুষশূন্য আছাদপুর গ্রামসহ আশপাশের কয়েকটি গ্রাম। ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে আছে পুড়ে যাওয়া মাজারের ইট-টাইলস ও বিভিন্ন স্থাপনার পুড়ে যাওয়া অংশ।
মহসিনের মা মিনুয়ারা বেগম বলেন, ‘ছেলে অপরাধ করেছে তাকে পুলিশের হাতে তুলে দিছি।
এর পরও আমাদের মাজার ও বাড়ি ঘরে আগুন দেওয়া হইছে। এক কাপড়ে ঘর থেকে বাহির হইছি। টাকা-পয়সা, স্বর্ণালংকারসহ কিচ্ছু আনতে পারিনি। কোনোরকমে জীবন বাঁচাইছি। তারা সবাই আইস্যাই বাড়ি ঘরে আগুন ধরাই দিছে। কোনো কথা বলতে পারি নাই, এর আগে দেখি বাড়ি ও মাজারের চার দিকে আগুন ছড়াই পড়ছে।’
হোমনা থানার ওসি মুহাম্মদ রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘এ ঘটনায় অজ্ঞাতসহ প্রায় ২ হাজার ২০০ জনের নামে থানায় মামলা হয়েছে। এলাকায় এখন থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। ঘটনাস্থলে পুলিশ মোতায়েন রাখা হয়েছে। ঘটনার সময়ের কিছু ভিডিও ফুটেজ সংগ্রহ করা হয়েছে। যারা এ ঘটনায় জড়িত ভিডিও ফুটেজ দেখে তাদের গ্রেপ্তার করা হবে।’