English

26.8 C
Dhaka
বৃহস্পতিবার, আগস্ট ২১, ২০২৫
- Advertisement -

বহুল প্রত্যাশিত মওলানা ভাসানী সেতুতে চলাচল শুরু

- Advertisements -

দীর্ঘ অপেক্ষার অবসান ঘটিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন হলো বহুল প্রত্যাশিত ‘মওলানা ভাসানী সেতু’। আজ বুধবার দুপুর ১টায় স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় এবং যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া হরিপুর প্রান্তে আনুষ্ঠানিকভাবে সেতুটির উদ্বোধন করেন। এ সময় হাজারো মানুষ উৎসবমুখর পরিবেশে সেতু পার হয়ে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন।

সেতুটির উদ্বোধন হওয়ায় তিস্তা পাড়ের মানুষের স্বপ্ন পূরণ হয়েছে। তারা আনন্দ-উল্লাসে উচ্ছ্বসিত হয়ে পড়েছেন। হাসি ফুটেছে তিস্তাপাড়ের মানুষের মুখে। এই সেতুটি কুড়িগ্রামের চিলমারী এবং গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার মানুষের বহুকালের স্বপ্ন ছিল। আজ তাদের স্বপ্ন বাস্তবায়িত হয়েছে।

হরিপুর এলাকার কলেজ শিক্ষক প্রভাত চন্দ্র পাল বলেন,‘তিস্তা নদীর ওপর নির্মিত সেতুটির নাম মওলানা ভাসানী সেতু দেওয়া আমরা খুব খুশি হয়েছি। বিখ্যাত মানুষের নামে সেতুটি হওয়ায় আমরা গর্ববোধ করছি। মওলানা ভাসানী সেতু হয়ে উঠবে তিস্তাপাড়ের মানুষের যোগাযোগ, অর্থনৈতিক, শিক্ষা ও সংস্কৃতির মেলবন্ধন।’

একই এলাকার স্কুল শিক্ষক শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা জানতাম সেতুটি চিলমারী-হরিপুর তিস্তা সেতু নামে চালু। আগে থেকেই এ ধরনের প্রচারণাও ছিল। কিন্তু সেতুটি উদ্বোধন হলো মওলানা ভাসানী সেতু নামে।’

চিলমারী উপজেলার কৃষক আহাদ আলী শেখ জানান, আগে যোগাযোগ ব্যবস্থা না থাকায় তাদের এলাকার অর্থনীতি, শিক্ষা, সংস্কৃতি ও চিকিৎসা উন্নত হয়নি। তিস্তা নদীর ওপর নির্মিত মওলানা ভাসানী সেতু চালু হওয়ায় তিস্তাপাড়ের গ্রামগুলো এখন শুধু উন্নতির দিকে ধাবিত হবে। আমি খুব খুশি হয়েছি।’

চিলমারীর ব্যবসায়ী আশরাফুল জানান, তিস্তা নদীর ওপর মওলানা ভাসানী সেতু চালু হওয়ায় চিলমারী থেকে ঢাকার দূরত্ব প্রায় ৯০ কিলোমিটার কমে গেছে। এতে সময় ও খরচ দুটোই সাশ্রয় হবে। সোনাহাট স্থলবন্দর আর চিলমারী নদীবন্দরের সঙ্গে রাজধানীর সরাসরি যোগাযোগ স্থাপন হয়েছে। এতে ব্যবসা-বাণিজ্যের নতুন দুয়ার খুলেছে।

গাইবান্ধা এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী উজ্জ্বল চৌধুরী বলেন, ‘স্থানীয়দের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে তিস্তা নদীর ওপর নির্মিত সেতুটির নাম মওলানা ভাসানী সেতু দেওয়া হয়েছে। এই নাম সর্বজন গৃহীত।

এতে বিখ্যাত মানুষকে সম্মান করা হয়েছে। দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর এই সেতু চালু হওয়ায় তিস্তাপাড়ের মানুষ অনেক খুশি। এটি শুধু একটি অবকাঠামো নির্মাণ নয়, বরং এটি হয়ে উঠেছে উত্তরবঙ্গের মানুষের স্বপ্ন, উন্নয়ন ও সম্ভাবনার প্রতীক।

এলজিইডি অফিস সূত্র জানা গেছে, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) অধীনে ২০২০ সালের সেপ্টেম্বরে যৌথভাবে সৌদি ফান্ড ফর ডেভেলপমেন্ট (এসএফডি) ও ওপিইসি ফান্ড ফর ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট (ওএফআইডি) অর্থায়নে এবং চায়না স্টেট কনস্ট্রাকশন ইঞ্জিনিয়ারিং করপোরেশনের মাধ্যমে প্রকল্পটির কাজ শুরু হয়।

শুরুতে ২০২৩ সালের জুনে শেষ করার কথা থাকলেও, নানা কারণে ৫ বার সময়সীমা পিছিয়ে অবশেষে গত ২০ আগস্ট সেতুটি খুলে দেওয়া হয়। সেতুটি নির্মাণে ব্যবহার করা হয়েছে ২৯০টি পাইল, ৩০টি পিলার, ২৮টি স্প্যান এবং ১৫৫টি গার্ডার। উভয় প্রান্তে পানি নিষ্কাশনের জন্য তৈরি করা হয়েছে ১২টি ব্রিজ ও ৫৮টি বক্স কালভার্ট। পাশাপাশি ১৩৩ একর জমি অধিগ্রহণ করে নদীশাসনসহ মোট ৫৭ কিলোমিটার সড়ক নির্মাণ করা হয়েছে।

এ সেতুর মূল কাঠামো নির্মাণে ব্যয় হয়েছে ৩৬৭ কোটি টাকা। আর সংযোগ সড়ক, নদীশাসন, কালভার্ট ও জমি অধিগ্রহণে খরচ হয়েছে আরও ৩৬৩ কোটি ৮৫ লাখ টাকা। তিস্তা নদীর বুকে এটি হলো সবচেয়ে বড় সড়ক।

প্রথম তিস্তা সড়ক সেতুটি নির্মিত হয় ২০১২ সালে লালমনিরহাট সদর উপজেলার গোকুন্ডা এলাকায়। দৈর্ঘ্য ৭৫০ মিটার, ব্যয় হয়েছিল ৮৭ কোটি টাকা। দ্বিতীয়টি নির্মিত হয় ২০১৮ সালে রংপুরের গঙ্গাচড়ার মহিপুরে। দৈর্ঘ্য ৮৫০ মিটার, ব্যয় হয়েছিল ১৩১ কোটি টাকা।

The short URL of the present article is: https://www.nirapadnews.com/yxnu
Notify of
guest
0 মন্তব্য
সবচেয়ে পুরাতন
সবচেয়ে নতুন Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments
Advertisements
সর্বশেষ

আল কোরআন ও আল হাদিস

- Advertisements -
এ বিভাগে আরো দেখুন