English

32.8 C
Dhaka
সোমবার, জুন ২৩, ২০২৫
- Advertisement -

জননন্দিত অভিনেতা শওকত আকবর-এর ২৫তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ

- Advertisements -

এ কে আজাদ: শওকত আকবর। অভিনেতা। বাংলাদেশের একজন খ্যাতিমান অভিনেতা তিনি। মূলত নায়ক হয়ে চলচ্চিত্র অভিনয়ে আসেন। পরবর্তিতে তিনি সহ-নায়ক হয়েও কিছু ছবিতে অভিনয় করেন। এক সময় একজন উচুমানের চরিত্রাভিনেতা হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেন। নানা ধরনের চরিত্রে বাস্তবধর্মী অভিনয় করে, নিজের অভিনয় প্রতিভায় মুগ্ধ করেছেন এদেশের সিনেমাপ্রেমীদের। একজন শক্তিমান অভিনেতা হিসেবে চলচ্চিত্রে নিজের অবস্থানকে নিয়ে গেছেন এক অনন্য উচ্চতায়। জননন্দিত অভিনেতা শওকত আকবর-এর ২৫তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ। তিনি ২০০০ সালের ২৩ জুন, লন্ডনে মৃত্যুবরণ করেন। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৬৩ বছর। অসাধারণ গুণি এই অভিনেতার স্মৃতির প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা জানাচ্ছি। তাঁর বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করছি।

শওকত আকবর (সাইয়েদ আকবর হোসেন) ১৯৩৭ সালের ৭ মার্চ, ভারতের বর্ধমান জেলায়, জন্মগ্রহণ করেন। তাঁরা পিতা ছিলেন হুগলির ইসলামিক কলেজের প্রভাষক। হুগলি স্কুলে প্রাথমিক লেখা-পড়া শুরু হয় তাঁর। স্কুলজীবন থেকেই সিনেমা দেখার ভিষন ঝোঁক ছিল, সেখান থেকেই অভিনয়ের প্রতি অনেকটা আসক্ত হয়ে পরেন। স্কুলজীবনে তিনি মঞ্চে অভিনয় শুরু করেন। তাঁর অভিনীত প্রথম নাটক ‘দেবদাস’।

বর্ধমান জেলায় হিন্দু-মুসলিম দাঙ্গা শুরু হলে পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে তৎকালীন পূর্ববাংলার ঢাকায় চলে আসেন এবং গেন্ডারিয়ায় স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করেন। ঢাকা গভঃ মুসলিম হাই স্কুল থেকে ১৯৫২ সালে মেট্রিক পাস করেন। ১৯৫৪ সালে, জগন্নাথ কলেজ থেকে ইন্টারমিডিয়েট পাস করে স্যার সলিমুল্লাহ মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি হন।
ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ ও সলিমুল্লাহ মেডিক্যাল কলেজে বাৎসরিক নাটকে নিয়মিত অভিনয় করতেন ।
শওকত আকবর ১৯৬১ সালে, নাটকে তাঁর সহশিল্পী মুক্তার সাথে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন।

মঞ্চ অভিনয় থেকে পরবর্তিতে চলচ্চিত্রে আসেন শওকত আকবর। নায়ক হিসেবে তাঁর অভিনীত প্রথম ছবি জিল্লুর রহিম পরিচালিত ‘এইতো জীবন’ (১৯৬৪ সালে মুক্তি পায়) আর মুক্তিপ্রাপ্ত প্রথম ছবি মুস্তাফিজ পরিচালিত ‘তালাশ’ মুক্তি পায় ১৯৬৩ সালে।

শওকত আকবর অভিনীত অন্যান্য ছবি- পয়সে, সুতরাং, দিল এক শিশা, ভাওয়াল সন্যাসী, সাতরং, পুণম কী রাত, জুগনু, আওর গম নেহি, আগুন নিয়ে খেলা, ভাইয়া, আখেরি স্টেশন, জংলী ফুল, অপরিচিতা, গোরী, চলো মান গায়ে, ভাইয়া, আলোর পিপাসা, অভিশাপ, মিলন, সাগর, জীবন থেকে নেয়া, বড় বউ, টাকা আনা পাই, জানাজানি, আপন দুলাল, ইশারা, অবুঝ মন, লালন ফকির, নতুন সুর, মেঘ ভাঙ্গা রোদ, জিঘাংসা, পিঞ্জর, ফকির মজনু শাহ, আলো ছায়া, মহেশখালীর বাঁকে, আরাধনা, নদের চাঁদ, শহর থেকে দূরে, বিজয়িনী সোনাভান, দিওয়ানা, রাজকন্যা, হুর-এ আরব, চম্পা চামেলি, খোকন সোনা, ছুটির ঘন্টা, তরুলতা, বাজিমাৎ, সোহাগ, অগ্নিশিখা, জনতা এক্সপ্রেস, ঘরণী, মানুষ, ঈদ মোবারক, যদি জানতেম, ভাই ভাই, দেনাপাওনা, পরিবর্তন, শক্তি, বিমানবালা, প্রেমকাহিনী, গোলমাল, সাধনা, হাইজ্যাক, জবাব, গৃহবিবাদ, বেরহম, তিন কন্যা, মাসুম, কুয়াশা, প্রতিরোধ, আওয়াজ, স্বর্গনরক, গুনাই বিবি, আদেশ, দিদার, অত্যাচার, ক্ষতিপূরণ, রঙিন রূপবান, আমার আদালত, চরমপত্র, মিমাংসা, সহধর্মিণী, বেদের মেয়ে জোছনা, শঙ্খমালা, পদ্মা মেঘনা যমুনা, সৎমানুষ, কাসেম মালার প্রেম, প্রেমের অহংকার, হাঙর নদী গ্রেনেড, ইত্যাদি।

‘আলোর পিপাসা’ ও ‘বিমানবালা’ নামে দুটি ভালোমানের চলচ্চিত্রও পরিচালনা করেছিলেন শওকত আকবর।

১৯৬৬ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত কাজী জহির পরিচালিত ‘ভাইয়া’ ছবিতে, ‘ভাইয়া’ চরিত্রে অভিনয়ের জন্য নিগার পুরস্কার অর্জন করেন শওকত আকবর ।

নায়ক হয়ে চলচ্চিত্রে আসা খ্যাতিমান অভিনেতা শওকত আকবর একসময় উচুমানের একজন চরিত্রাভিনেতা হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেন। নানা ধরনের চরিত্রে বাস্তবধর্মী অভিনয় করে, নিজের অভিনয় প্রতিভায় মুগ্ধ করেছেন এদেশের সিনেমাপ্রেমীদের।

যখন যে চরিত্রে অভিনয় করেছেন, মানিয়ে গেছেন, উৎড়ে গেছেন অভিনয় পারঙ্গমতায়। একজন শক্তিমান অভিনেতা হিসেবে চলচ্চিত্রে নিজের অবস্থানকে নিয়ে গেছেন এক অনন্য উচ্চতায়। বাংলাদেশের চলচ্চিত্রের একজন জননন্দিত ও প্রথিতযশা অভিনেতা শওকত আকবর- চির অম্লান হয়ে থাকবেন বাংলাদেশের চলচ্চিত্রের ইতিহাসে ।

The short URL of the present article is: https://www.nirapadnews.com/zmoz
Notify of
guest
0 মন্তব্য
সবচেয়ে পুরাতন
সবচেয়ে নতুন Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments
Advertisements
সর্বশেষ
- Advertisements -
এ বিভাগে আরো দেখুন