English

25 C
Dhaka
বুধবার, মে ৮, ২০২৪
- Advertisement -

খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করুন: বিশ্বব্যাপী খাদ্যসংকটের আশঙ্কা

- Advertisements -
Advertisements
Advertisements

আমাদের প্রধান দুটি খাদ্যশস্য চাল ও গম। নানা কারণে এরই মধ্যে অভ্যন্তরীণ বাজারে এ দুটি পণ্যের সরবরাহে ঘাটতি সৃষ্টি হয়েছে এবং দাম ক্রমাগতভাবে বাড়ছে। দেশীয় ও আন্তর্জাতিক গবেষণা তথ্য বলছে, নিকট-ভবিষ্যতে এ দুটি খাদ্যশস্যের সরবরাহ আরো বেশি বিঘ্নিত হতে পারে। যুক্তরাষ্ট্রের কৃষি মন্ত্রণালয়ের অধীন বৈদেশিক কৃষি সেবা বিভাগের প্রতিবেদন অনুযায়ী বাংলাদেশে আগামী বছর চাল ও গম মিলিয়ে ৯০ লাখ টন খাদ্যশস্য আমদানি করতে হতে পারে।

এর মধ্যে চাল আমদানির পরিমাণ হতে পারে সাড়ে ১১ লাখ টন এবং বাকিটা গমের। গত বৃহস্পতিবার জাতিসংঘের খাদ্যবিষয়ক সংস্থা বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি (ডাব্লিউএফপি) নতুন করে বিশ্বব্যাপী খাদ্যসংকটের আগাম সতর্কতা জারি করেছে। আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা অক্সফামের প্রতিবেদনেও বৈশ্বিক খাদ্যসংকটের পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, দেশে খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য দ্রুত প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নিতে হবে।
বৈশ্বিক খাদ্যসংকটের জন্য প্রধানত দায়ী করা হচ্ছে জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব। পাকিস্তান বিভিন্ন দেশে খাদ্যশস্য রপ্তানি করে। বাংলাদেশও দেশটি থেকে চাল আমদানি করে। কিন্তু দেশটির এক-তৃতীয়াংশ এখন বন্যাকবলিত। আগামী বছর দেশটির পক্ষে খাদ্যশস্য রপ্তানি করা প্রায় অসম্ভব। উল্টো দেশটিকে খাদ্যশস্য আমদানি করতে হতে পারে।
পৃথিবীজুড়েই এমন পরিস্থিতি বিরাজ করছে। কোথাও বন্যা-অতিবৃষ্টি, কোথাও খরায় ফসলহানি হচ্ছে। অভ্যন্তরীণ চাহিদা নিশ্চিত করতে গিয়ে ভারতকেও বারবার খাদ্যশস্য রপ্তানির ওপর নিষেধাজ্ঞা কিংবা কড়াকড়ি আরোপ করতে হচ্ছে।

তাই বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, আগেভাগেই বাংলাদেশকে প্রয়োজনীয় খাদ্যশস্য আমদানির উদ্যোগ নিতে হবে। সরকারি তথ্য মতে, বাংলাদেশে এখন চাল মজুদের পরিমাণ প্রায় ২০ লাখ টন। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, এই মজুদ কমপক্ষে ৩০ লাখ টন করতে হবে। এ জন্য খাদ্যশস্য সংরক্ষণ পরিস্থিতির দ্রুত উন্নয়ন করতে হবে। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ ও পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞার কারণে গমের সরবরাহ নিয়েও সংকট তৈরি হয়েছে। এ ক্ষেত্রেও বাংলাদেশকে সম্ভাব্য সব উৎস থেকে আমদানি বাড়ানোর উদ্যোগ নিতে হবে।

বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, একই সঙ্গে দেশীয় উৎপাদন বাড়ানোরও উদ্যোগ নিতে হবে। এ বছর সাগর উত্তাল থাকায় এবং অস্বাভাবিক জোয়ারের কারণে উপকূলের বিস্তীর্ণ এলাকায় আমন চাষাবাদ বিঘ্নিত হয়েছে।

চার দফা বন্যা ও উজানের ঢলে হাওরাঞ্চলসহ উত্তরাঞ্চলে বোরো ও আউশের আবাদ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এসব এলাকার কৃষকরা আমন উৎপাদনের মাধ্যমে ক্ষতি কিছুটা পুষিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছেন। কিন্তু বিভিন্ন এলাকা থেকে সার ও সেচ সংকটের খবর পাওয়া যাচ্ছে। এ ব্যাপারে দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে।

চাল আমদানিকে উৎসাহিত করতে সরকার শুল্ক ও করভার সাড়ে ৬২ শতাংশ থেকে দুই দফায় কমিয়ে ৫ শতাংশ করেছে। প্রয়োজনে তা আরো কমিয়ে এবং প্রণোদনা দিয়ে আমদানি উৎসাহিত করা যেতে পারে। সরকারিভাবেও আমদানির পরিমাণ বাড়াতে হবে। দ্রুত সংরক্ষণ সুবিধা তৈরি করতে হবে। অবৈধ মজুদের মাধ্যমে বাজারে কেউ যাতে কৃত্রিম সংকট তৈরি করতে না পারে, সেদিকে কড়া দৃষ্টি রাখতে হবে। যেকোনো মূল্যে দেশের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।

সাবস্ক্রাইব
Notify of
guest
0 মন্তব্য
Inline Feedbacks
View all comments
Advertisements
সর্বশেষ
- Advertisements -
এ বিভাগে আরো দেখুন