যত কিছুই হোক, দায় একজনের কাঁধে। তিনি লিওনেল মেসি। বার্সেলোনার সব সমস্যার মূলে নাম জড়িয়ে যাওয়ার খবর শুনতে শুনতে এখন রীতিমত ক্লান্ত আর্জেন্টাইন খুদেরাজ। এসব নিয়ে কথা বলতেও এখন বিরক্তি লাগে তার।
বার্সার সুখের ঘরে আগুন লেগেছে অনেক আগেই। বোর্ডের সঙ্গে নানা বিরোধের জেরে গত আগস্টে ক্লাব ছাড়ার ঘোষণা দেন মেসি। যে ক্লাবটিতে ১৩ বছর বয়সে এসেছিলেন, ৩৩ বছর পেরিয়ে সেটি ছেড়ে দেয়ার সিদ্ধান্তটা কি এতটাই সহজ ছিল? মেসি কতটা বিতশ্রদ্ধ হয়ে এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন, আন্দাজ করাই যায়।
কিন্তু বার্সা এই জায়গায় একটি খেল খেলেছে। এমনিতে লা লিগার মৌসুম শেষ হয় জুনে। চুক্তি অনুযায়ী, ক্লাব ছাড়তে হলে মৌসুম শেষেই জানাতে হবে মেসিকে। করোনার কারণে মৌসুম শেষ হওয়ার সময় পিছিয়ে যায় আগস্টে। সেই হিসেবে মৌসুম শেষেই জানিয়েছেন মেসি। কিন্তু জুনে জানানোর নিয়ম ছিল, এমন কথা বলে আর্জেন্টাইন খুদেরাজকে আটকে দেয় বার্সা।
মেসি চাইলে আইনি লড়াইয়ে যেতে পারতেন। কিন্তু যে ক্লাবটি তাকে পেলে-পুষে বড় করেছে, তাদের বিরুদ্ধাচারণ করতে চাননি। তাই আরেকটি মৌসুম থেকে যেতে রাজি হন।
মেসির সঙ্গে প্রকাশ্য একটা বিরোধ লেগে গিয়েছিল বার্সা সভাপতি হোসেপ মারিয়া বার্তোমেউয়ের। অক্টোবরেই তিনি পদত্যাগ করেন। এতে করে মেসি বার্সা ছাড়ার সিদ্ধান্ত বদলাতেও পারেন, আশা করছেন ভক্তরা।
কিন্তু এখানেই তো শেষ নয়। নতুন বিতর্ক বার্সার ফরাসি তারকা আঁতোয়া গ্রিজম্যানকে নিয়ে। অ্যাটলেটিমো মাদ্রিদ থেকে ন্যু ক্যাম্পে এসে মানিয়ে নিতে পারছেন না বিশ্বকাপজয়ী এ তারকা। এর দায়ও পড়ছে মেসির কাঁধে।
গ্রিজম্যানের আত্মীয় ইমানুয়েল লোপেজ ও সাবেক এজেন্ট এরিক ওলহাটসের মতে, ফরাসি তারকাকে সফল হতে দিচ্ছেন না মেসি। লোপেজ একটি ফরাসি পত্রিকাকে বলেছেন, ‘আমরা জানতাম বার্সেলোনায় গিয়ে প্রথম প্রথম গ্রিজম্যান খুব ভালো করতে পারবে না। ভেবেছিলাম এমন অবস্থা ছয় মাসের বেশি থাকবে না। কিন্তু দেখলাম, গোটা মৌসুমই গ্রিজম্যানকে সংগ্রাম করতে হলো। আসলে মেসির পাশে খেলাটা খুবই কঠিন একটা কাজ। আমরা সবাই জানি, ভেতরে-ভেতরে কী হয়!’
ওলহাটস আরও অভিযোগ করেন, বার্সার অনুশীলনেও কোচিং স্টাফরা বিশেষ কয়েকজন খেলোয়াড়কে বাড়তি সুবিধা দেন। তিনি বলেন, ‘মেসি অনুশীলনে একেবারেই খাটতে চায় না। বার্সেলোনার অনুশীলন প্রক্রিয়াটিই বিশেষ কিছু খেলোয়াড়কে খুশি করতে বানানো।’
এমন সব অভিযোগ মেসির কানে পৌঁছলো আর্জেন্টিনা জাতীয় দলের হয়ে খেলে বুধবার বার্সেলোনায় ফেরার পর। বিমানবন্দরে উৎসুক সাংবাদিকরা প্রসঙ্গটি তুলতেই মেসি বলে ওঠেন, ‘সত্যিটা হলো ক্লাবের সব সমস্যার কারণ হতে হতে আমি এখন বেশ ক্লান্ত। তার ওপর ১৫ ঘন্টার ফ্লাইট শেষ করে এসে আমাকে কর কর্তৃপক্ষের সঙ্গে দেখা করতে হবে। এটা আসলেই পাগলামি।’
প্রসঙ্গত, স্পেনে কয়েক বছর ধরেই কর জটিলতায় হাঁসফাঁস করতে হচ্ছে মেসিকে। কর ফাঁকির দায়ে ২০১৬ সালে তাকে ২১ মাসের কারাদণ্ডাদেশ দেয় স্প্যানিশ আদালত। যদিও স্পেনের আইন অনুযায়ী, আগে দণ্ডপ্রাপ্ত না হলে দুই বছরের কম সময়ের সাজায় জেল খাটতে হয় না।
The short URL of the present article is: https://www.nirapadnews.com/0p8y
সাবস্ক্রাইব
নিরাপদ নিউজ আইডি দিয়ে লগইন করুন
0 মন্তব্য
সবচেয়ে পুরাতন