English

37 C
Dhaka
রবিবার, মে ৫, ২০২৪
- Advertisement -

ঐতিহ্যবিনাশী কর্মকাণ্ড: শতবর্ষী আর্ট স্কুল ভাঙা

- Advertisements -
Advertisements
Advertisements

কোনো দেশ বা জাতিগোষ্ঠী কতটা সভ্য, রুচিশীল ও উন্নত তার একটা প্রধান মাপকাঠি হচ্ছে তার ঐতিহ্যপ্রীতি ও ঐতিহ্য সংরক্ষণের সফল উদ্যোগ। সভ্য মানুষ নিজেদের ঐতিহ্য নিয়ে গর্ব অনুভব করে। নিজেদের এগিয়ে চলার ক্ষেত্রে অনুপ্রেরণার পাথেয় খুঁজে পায় নিজস্ব ঐতিহ্যের মধ্যে। কিন্তু আমরা যেন সভ্যতার সেই চিরায়ত ধারা থেকে অনেক দূরে।

আমরা আমাদের ঐতিহ্য নিয়ে গর্বিত নই। ঐতিহ্যবাহী স্থাপনা গুঁড়িয়ে দিতে আমাদের দ্বিতীয়বার ভাবার প্রয়োজন হয় না। সেখানে বহুতল ভবন তৈরি করে আমরা তৃপ্তি অনুভব করি। অথচ সভ্য সমাজে হয় তার উল্টোটা। ঐতিহ্য বিনষ্টকারী যেকোনো কাজকে তারা লজ্জাকর মনে করে। তাহলে আমরা আমাদের পরিচয় নিয়ে, ঐতিহ্য নিয়ে এত উদাসীন কেন? কেন একের পর এক ঐতিহাসিক স্থাপনা ধ্বংস করছি? আমরা যে কতটা ঐতিহ্যবিমুখ তার প্রমাণ পাওয়া যায় দেশের প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন ও ঐতিহাসিক স্থাপনাগুলো পরিদর্শনে গেলে। স্থাপনা ভেঙে পড়ছে, মানুষ ভবনের নানা নিদর্শন, এমনকি ইট পর্যন্ত খুলে নিয়ে গেছে বা যাচ্ছে।

অথচ উন্নত দেশ ও জাতিগুলো নিজেদের ঐতিহ্য বা প্রাচীন নিদর্শনগুলো আগলে রাখে। নিজেদের সম্ভ্রান্ত পরিচয়কে শাণিত করে। গর্বের সঙ্গে সেগুলো তুলে ধরে। তারা যে একটি প্রাচীন সভ্য জাতিসত্তার উত্তরাধিকারী, সেটি তারা অহংকারের সঙ্গে বলে বেড়ায়। কিন্তু আমরা একের পর এক আমাদের সমৃদ্ধ অতীতকে অস্বীকার করছি। আমাদের ঐতিহাসিক নিদর্শন ও পুরাকীর্তিগুলো ধ্বংস করে চলেছি। এমনই এক ঐতিহ্যবিনাশী কর্মকাণ্ডের খবর প্রকাশিত হয়েছে। খবরটি এ দেশের সচেতন মানুষের মনোবেদনার অন্যতম কারণ।

খুলনা মহানগরীর মহেশ্বরপাশা স্কুল অব আর্ট ভবনটি ভেঙে ফেলা হচ্ছে। এই প্রতিষ্ঠান ১৯০৪ সালে শিল্পী শশীভূষণ পাল প্রতিষ্ঠা করেন। তাঁর জমিতেই গড়ে তোলা এই প্রতিষ্ঠানটি পূর্ববঙ্গের প্রথম প্রাতিষ্ঠানিক চারুকলা শিক্ষার কেন্দ্র। চলতি বছরের শুরুতে ভবনটি ভেঙে নতুন ভবন নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হলে খুলনার নাগরিক সমাজ ঐতিহ্যবাহী এই ভবন রক্ষা করে নতুন ভবন নির্মাণের দাবি জানায়। একই সঙ্গে তারা ভবনটিকে আর্ট গ্যালারি হিসেবে গড়ে তোলারও দাবি জানায়। ভবনটির পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে একটি কারিগরি কমিটিও গঠন করা হয়। কিভাবে ভবনটি রক্ষা করা যায় সে বিষয়ে কমিটির পরামর্শ দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু এখন দেখা যাচ্ছে, ভবনটি ভেঙে পড়েছে দাবি করে ভবনটির চিহ্ন মুছে ফেলার চেষ্টা করা হচ্ছে।

আমরা আশা করি, সরকারের সর্বোচ্চ মহল থেকে এ ব্যাপারে হস্তক্ষেপ করা হবে।

সাবস্ক্রাইব
Notify of
guest
0 মন্তব্য
Inline Feedbacks
View all comments
Advertisements
সর্বশেষ
- Advertisements -
এ বিভাগে আরো দেখুন