English

34 C
Dhaka
শনিবার, এপ্রিল ২৭, ২০২৪
- Advertisement -

জনভোগান্তি দূর করুন: উপকূলে নোনা পানির আগ্রাসন

- Advertisements -
বৈশ্বিক উষ্ণায়নের কারণে বিজ্ঞানীদের ধারণার চেয়েও দ্রুতগতিতে গলছে মেরু অঞ্চলের বরফ। ফলে বাড়ছে সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা। সাগরের নোনা পানি ঢুকে যাচ্ছে দেশের অভ্যন্তরের নদীগুলোতে। সীমিত হয়ে আসছে মিঠা পানির উৎস।
সেই প্রভাব ভয়াবহ রূপে লক্ষ করা যাচ্ছে বাংলাদেশেও। গতকাল কালের কণ্ঠে প্রকাশিত প্রতিবেদনে দেখা যায়, বাংলাদেশের উপকূলীয় অঞ্চলের সুপেয় পানির আধারগুলোতে লবণের পরিমাণ সহনীয় মাত্রার থেকে ছয় গুণ পর্যন্ত বেড়ে গেছে। উপকূলীয় অঞ্চলের প্রায় ৭৩ শতাংশ মানুষকে সেই পানি পান করতে হচ্ছে।
এর ফলে উচ্চ রক্তচাপ, হৃদরোগ, কিডনির রোগসহ নানা ধরনের স্বাস্থ্য সমস্যার আশঙ্কা করা হচ্ছে।
শুধু স্বাস্থ্য সমস্যা নয়, নোনা পানির আগ্রাসনে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে উপকূলীয় অঞ্চলের চাষাবাদও। এমন পরিস্থিতিতে গতকাল সারা বিশ্বের মতো বাংলাদেশেও পালিত হয়েছে বিশ্ব পানি দিবস।
বৈশ্বিক উষ্ণায়ন ও জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে শুধু সুপেয় পানি নয়, আমাদের উপকূলীয় জনজীবন নানা রকম সংকটের মুখোমুখি হয়েছে। আগের তুলনায় ঘূর্ণিঝড়-জলোচ্ছ্বাসের সংখ্যা ও তীব্রতা দুটিই বেড়েছে।
নতুন নতুন এলাকা নোনা পানিতে স্থায়ীভাবে তলিয়ে যাচ্ছে। জলোচ্ছ্বাস ছাড়াও অমাবস্যা-পূর্ণিমার বর্ধিত জোয়ারেও তলিয়ে যাচ্ছে অনেক এলাকা। এই অবস্থায় পুকুরের পানিও লবণাক্ত হয়ে যাচ্ছে।
জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচির (ইউএনডিপি) এক জরিপে উঠে এসেছে উপকূলীয় বাসিন্দাদের নিরাপদ খাওয়ার পানি নিয়ে দুর্ভোগের চিত্র। ওই জরিপ প্রতিবেদনে বলা হয়, খুলনার পাইকগাছা, কয়রা ও দাকোপ এবং সাতক্ষীরার শ্যামনগর ও আশাশুনি উপজেলার বাসিন্দাদের ৭৩ শতাংশই ঝুঁকিপূর্ণ লবণাক্ত পানি পান করতে বাধ্য হচ্ছে।
ক্রমেই ভূগর্ভেও নোনা পানির অনুপ্রবেশ বাড়ছে। এক লিটার পানিতে লবণাক্ততার গ্রহণযোগ্য মাত্রা হচ্ছে এক হাজার মিলিগ্রাম। দেখা যায়, শুষ্ক মৌসুমে শ্যামনগরে টিউবওয়েলের পানির লবণাক্ততা বেড়ে ছয় হাজার ৬০০ মিলিগ্রাম পর্যন্ত হয়ে যায়। এর আগে বিভিন্ন গবেষণায় উঠে এসেছে ভূগর্ভে নোনা পানির অনুপ্রবেশ দেশের মধ্যাঞ্চল পর্যন্ত চলে আসে।
মৃত্তিকা সম্পদ উন্নয়ন ইনস্টিটিউট (এসআরডিআই) এবং লবণাক্ততা ব্যবস্থাপনা ও গবেষণা কেন্দ্রের তথ্যানুযায়ী, দেশের উপকূলীয় অঞ্চলে গত ৩৬ বছরে লবণাক্ত জমি বেড়ে হয়েছে প্রায় ২৬.৭ শতাংশ।
একাধিক বেসরকারি সংস্থার মতে, উপকূলীয় এলাকায় লবণাক্ততার পরিমাণ বর্তমানে ৬০ শতাংশের কাছাকাছি। ফলে হাজার হাজার একর জমি ফসল উৎপাদনের অনুপযোগী হয়ে পড়ছে।
সমস্যার সমাধানে সরকারি-বেসরকারি উদ্যোগে পুকুর খনন, নলকূপ স্থাপন, নোনা পানি পরিশোধন যন্ত্র পন্ডস অ্যান্ড ফিল্টার (পিএএফ) স্থাপন এবং বৃষ্টির পানি ধরে রাখতে রেইন ওয়াটার হার্ভেস্টিংয়ের প্রকল্প নেওয়া হলেও সেগুলো থেকে খুব একটা সুফল মিলছে না।
তাই আমরা মনে করি, প্রকল্প গ্রহণ, পরিচালনা ও রক্ষণাবেক্ষণে আরো বেশি গুরুত্ব দিতে হবে। উপকূলীয় জনজীবনের ভোগান্তি দূর করতে হবে।
সাবস্ক্রাইব
Notify of
guest
0 মন্তব্য
Inline Feedbacks
View all comments
Advertisements
সর্বশেষ
- Advertisements -
এ বিভাগে আরো দেখুন