English

38 C
Dhaka
শুক্রবার, এপ্রিল ২৬, ২০২৪
- Advertisement -

দারিদ্র্য কমাতে চাই ব্যাপক উদ্যোগ: বাড়ছে দরিদ্র মানুষের সংখ্যা

- Advertisements -
Advertisements
Advertisements

করোনা মহামারি বিশ্ব অর্থনীতিতে ব্যাপক ক্ষতিকর প্রভাব ফেলেছে। উন্নত-অনুন্নত-নির্বিশেষে প্রায় সব দেশের মোট জাতীয় উৎপাদন কমে গেছে। উন্নয়নের গতি মন্থর হয়েছে। বাংলাদেশও তার বাইরে নয়। এখানেও অর্থনীতি নানা প্রতিকূলতা মোকাবেলা করছে। ব্যক্তি পর্যায়েও মানুষের আয়-উন্নতি কমে গেছে। বহু মানুষ চাকরি হারিয়েছেন। অনেক ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী তাঁদের পুঁজি হারিয়েছেন। সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন দৈনিক ভিত্তিতে কাজ করা মানুষ। ফলে নতুন করে বহু মানুষ দারিদ্র্যসীমার নিচে নেমে গেছেন। ব্র্যাক ইনস্টিটিউট অব গভর্ন্যান্স অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (বিআইজিডি) এবং পাওয়ার অ্যান্ড পার্টিসিপেশন রিসার্চ সেন্টারের (পিপিআরসি) জরিপেও উঠে এসেছে এমন তথ্য। গত বৃহস্পতিবার জরিপের চতুর্থ ধাপের ফলাফল উপস্থাপন করে বলা হয়, গত বছরের মার্চে দেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ শুরু হওয়ার পর থেকে চলতি বছরের আগস্ট পর্যন্ত ১৮ মাসে মোট তিন কোটি ২৪ লাখ মানুষ নতুন করে দরিদ্র হয়েছে। গত মার্চে এই সংখ্যা ছিল দুই কোটি ৪৫ লাখ।
জরিপের ফলাফলে উঠে এসেছে, গত মার্চের তুলনায় গত আগস্টে শহরের বস্তিবাসীর আয় কমেছে ১৮ শতাংশ আর গ্রামের মানুষের আয় কমেছে ১৫ শতাংশ। স্বল্পশিক্ষিত ও দরিদ্র শ্রেণির দুই-তৃতীয়াংশ মানুষ জানিয়েছে, তারা প্রত্যাশিত কাজ পায়নি। প্রথমবার লকডাউনে ৪৫ শতাংশ পরিবার সামান্য পরিমাণ ত্রাণ সহায়তা পেলেও দ্বিতীয়বার লকডাউনে এই সহায়তা নেমে এসেছে ২৩ শতাংশে। মহামারির আগে গত বছর ফেব্রুয়ারি মাসে এসব পরিবারে ঋণের পরিমাণ ছিল বার্ষিক আয়ের ১৩ শতাংশের মতো। চলতি বছর আগস্টে এই হার বেড়ে হয়েছে ২৮ শতাংশ। এসব পরিবারের ঋণ পরিশোধের ক্ষমতাও অনেক কমে গেছে।
পরিবারগুলোয় মাছ, মাংস, দুধ, ফল ইত্যাদি পুষ্টিকর খাদ্য গ্রহণ কমে গেছে। স্বাস্থ্যঝুঁকির পাশাপাশি এসব পরিবারের সন্তানরা শিক্ষাবঞ্চিত হয়ে পড়ছে। মেয়েশিশুদের মধ্যে বাল্যবিবাহ অনেক বেড়ে গেছে। গবেষণা ফলাফলে সতর্ক করা হয়েছে, ‘নতুন দরিদ্র’ পরিবারগুলো দীর্ঘ মেয়াদে দারিদ্র্যের কাতারে চলে যেতে পারে। এ অবস্থায় যদি আবারও করোনার নতুন ঢেউ শুরু হয়, তাহলে পরিস্থিতি আরো শোচনীয় হতে পারে। আগেও কিছু কিছু জরিপে এমন তথ্য উঠে এসেছিল। সাউথ এশিয়ান নেটওয়ার্ক অন ইকোনমিক মডেলিং (সানেম) ও অ্যাকশনএইড বাংলাদেশের এক জরিপে উঠে এসেছিল, আত্মনির্ভরশীল কিংবা নিজে ব্যবসা পরিচালনা করে—এমন প্রায় ৭৯.৭ শতাংশ তরুণের মাসিক আয় কমে গেছে। আর চাকরি করে এমন ৫৭.৪ শতাংশ তরুণের বেতন বা আয় কমে গেছে। অনেকে চাকরি হারিয়েছেন। সেই পরিস্থিতি মোকাবেলায় উদ্যোগের যথেষ্ট অভাব দেখা গেছে।
দারিদ্র্য বিমোচনে সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশের সাফল্য সারা বিশ্বে প্রশংসিত হয়েছে। কিন্তু করোনার কারণে এ ক্ষেত্রে যে বিপর্যয় নেমে এসেছে তা সঠিকভাবে মোকাবেলা করতে হবে। এ জন্য সুনির্দিষ্ট নীতিমালা নিয়ে এগিয়ে যেতে হবে। সমন্বিত পরিকল্পনার ভিত্তিতে কর্মসূচি গ্রহণ করতে হবে এবং তা যথাযথভাবে বাস্তবায়ন করতে হবে।

সাবস্ক্রাইব
Notify of
guest
0 মন্তব্য
Inline Feedbacks
View all comments
Advertisements
সর্বশেষ
- Advertisements -
এ বিভাগে আরো দেখুন