English

29 C
Dhaka
রবিবার, এপ্রিল ২৮, ২০২৪
- Advertisement -

দ্রুত বাস্তবায়ন করা হোক: ঢাকায় বৃত্তাকার নৌপথ নির্মাণ প্রকল্প

- Advertisements -
পৃথিবীতে খুব কম শহর আছে, যাকে ঘিরে রয়েছে পাঁচটি নদী। বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকা তেমনই দুর্লভ সৌভাগ্যের অধিকারী। কিন্তু দীর্ঘ অবহেলা ও উদাসীনতার কারণে সেই সৌভাগ্য আজ দুর্ভাগ্যে রূপ নিয়েছে। ক্রমাগত দখল, দূষণ ও ভরাটের কারণে সব নদীই এখন মৃতপ্রায়।
অভ্যন্তরে থাকা অর্ধশতাধিক খালের একটি বড় অংশের অস্তিত্ব নেই। সামান্য বৃষ্টিতেই ঢাকায় ব্যাপক জলাবদ্ধতা দেখা দেয়। ঘরদোরে পানি উঠে যায়। নোংরা ও দুর্গন্ধযুক্ত পানিতে চলাচল করতে হয়।
বিশেষজ্ঞরা বলেন, নদী ও খালগুলো সচল থাকলে ঢাকার এমন অবস্থা হতো না। সুপেয় পানির উৎসও হতো এই নদীগুলো। পণ্য ও যাত্রী পরিবহন সহজ হতো। প্রকাশিত প্রতিবেদনে দেখা যায়, সরকারও চেয়েছিল পাঁচটি নদীর সঙ্গে ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ ও টঙ্গী নদীবন্দরকে যুক্ত করে বৃত্তাকার নৌপথ সৃষ্টি করতে।
কিন্তু ২০১৫ সালে গৃহীত তিন পর্যায়ের এই প্রকল্পের অগ্রগতি খুব সন্তোষজনক নয়। ইতালির ভেনিস শহরকে ‘পানির শহর’, ‘খালের শহর’ এবং এমন আরো অনেক নামে ডাকা হয়। নদী ও খালের সুন্দর ব্যবস্থাপনার কারণে সারা দুনিয়ার পর্যটক শহরটিতে ভিড় জমায়। আর ঢাকা মহানগরীর নদী ও খালগুলোর অবস্থা এমন পর্যায়ে পৌঁছে ছিল যে নাকে রুমাল না চেপে সেগুলোর কাছে যাওয়া যেত না। প্রকল্পের কারণে সেই পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হয়েছে।
কিন্তু যে গতিতে কাজ হচ্ছে, তাতে এই কাজ সম্পন্ন হতে আরো কত বছর লাগবে তা কেউ বলতে পারবে না। জানা যায়, প্রকল্পের আওতায় যে কাজগুলো করার কথা তার মধ্যে রয়েছে—নদীর জমি উদ্ধার বা অধিগ্রহণ, ভূমি উন্নয়ন, বিদ্যমান তীর রক্ষা, এলাকায় কংক্রিটের হাঁঁটা পথ, নিচু তীরভূমিতে কলামের ওপর হাঁটা পথ, সীমানাপ্রাচীর, বসার বেঞ্চ, কংক্রিট ও স্টিলের জেটি, পার্কিং ইয়ার্ড নির্মাণ করা।
এ ছাড়া ড্রেনেজ ব্যবস্থাপনা, ইকো পার্ক, সবুজ বনায়ন ও জলজ উদ্ভিদ বেষ্টনীও গড়ে তোলার লক্ষ্য ছিল। প্রকল্পের উদ্দেশ্য অতি মহৎ—এ নিয়ে কারো কোনো দ্বিমত নেই। কিন্তু বাস্তবায়নের ধীরগতি মানুষের আগ্রহ মেটাতে পারছে না। নগরীর সৌন্দর্য বৃদ্ধি, পর্যটন, অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।
ঢাকার চারপাশে থাকা নদীগুলো উদ্ধারে ২০০৯ সালে উচ্চ আদালত থেকে ১২ দফা নির্দেশনা দেওয়া হয়। যেগুলোর মধ্যে ছিল ক্যাডেস্ট্রাল সার্ভে বা সিএস মানচিত্র অনুযায়ী স্থায়ীভাবে নদীগুলোর সীমানা নির্ধারণ করা, নদীর পার দিয়ে ওয়াকওয়ে নির্মাণ করা, প্রচুর বৃক্ষ রোপণ করা, নদীর মধ্যে থাকা সব ধরনের স্থাপনা উচ্ছেদ করা ইত্যাদি।
কিন্তু ২০১১ সালে সীমানা চিহ্নিত করে খুঁটি স্থাপনের কাজ শুরু হলেও তা এখনো সম্পন্ন হয়নি। সীমানা চিহ্নিত করার ক্ষেত্রে সিএস মানচিত্র সঠিকভাবে অনুসরণ না করার অভিযোগও আছে। নদী ভরাট করে নির্মিত বহু স্থাপনা এখনো রয়ে গেছে নদীর বুকে।
প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, নদীর জায়গার মালিকানা নিয়ে অনেক মামলা আদালতে বিচারাধীন থাকায় প্রকল্পের কাজের অগ্রগতি বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। আমরা চাই, দ্রুত মামলা জটের নিরসন হোক। বৃত্তাকার নৌপথ নির্মাণের কাজ দ্রুততম সময়ে সম্পন্ন করা হোক।
সাবস্ক্রাইব
Notify of
guest
0 মন্তব্য
Inline Feedbacks
View all comments
Advertisements
সর্বশেষ
- Advertisements -
এ বিভাগে আরো দেখুন