English

29 C
Dhaka
রবিবার, এপ্রিল ২৮, ২০২৪
- Advertisement -

পানিপ্রবাহ বাধামুক্ত হোক: ব্রহ্মপুত্র নদে বাঁধ দিয়ে রাস্তা নির্মাণ

- Advertisements -
নদী বাঁচলে দেশ বাঁচবে—এটা কথার কথা নয়, বাস্তব সত্য। তা সত্ত্বেও নদীর ওপর অত্যাচারের মাত্রা দিন দিন বেড়েই চলেছে। কোথাও নদী দখল করে স্থাপনা নির্মাণ করা হচ্ছে, কোথাও নদীতে বাঁধ দিয়ে চাষাবাদ করা হচ্ছে, কোথাও নদীর প্রবাহ বন্ধ করে রাস্তা নির্মাণ করা হচ্ছে, কোথাও নদীর জায়গা দখল করে ইটভাটা নির্মাণসহ নানা রকম অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড করা হচ্ছে। আর এ কাজগুলো মূলত করেন বিত্তশালী বা প্রভাবশালীরা, যাঁদের বিরুদ্ধে প্রশাসনও তেমন কোনো পদক্ষেপ নেয় না।
তাহলে এ দেশে নদী বাঁচবে কী করে? আর নদী না বাঁচলে দেশের পরিণতি কী হবে? গতকাল কালের কণ্ঠে প্রকাশিত খবর থেকে জানা যায়, নরসিংদী সদর উপজেলার শীলমান্দি ইউনিয়নের শেখেরচর এলাকায় ব্রহ্মপুত্র নদের কিছু অংশ মাটি দিয়ে ভরাট করে নিজস্ব রাস্তা নির্মাণ করেছে পাকিজা কটন স্পিনিং মিলস লিমিটেড নামের একটি শিল্পপ্রতিষ্ঠান। পাশাপাশি নদের পার দিয়ে জনসাধারণের চলাচলের জন্য তৈরি করা সড়কটি টিনের বেড়া দিয়ে বন্ধ করে দিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। শুধু তা-ই নয়, সড়কের ওপর তৈরি করা হয়েছে দোতলা ভবন। সব কাজই অবৈধ, বেআইনি, কিন্তু আইনের প্রয়োগ কোথায়?জানা যায়, নরসিংদীতে নদীর প্রবাহ তৈরি করতে প্রায় ৯০৩ কোটি টাকা ব্যয়ে ছয়টি নদ-নদী পুনঃখনন কার্যক্রম শুরু হয় ২০১৮ সালে।
এই ছয়টি নদ-নদীর একটি হলো পুরনো ব্রহ্মপুত্র নদ। পানি উন্নয়ন বোর্ডের তত্ত্বাবধানে নদ-নদীগুলো পুনঃখনন করে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ২৪ ইঞ্জিনিয়ার কনস্ট্রাকশন ব্রিগেড। প্রকল্পের কাজ শেষ হয় গত জুন মাসে। খননকাজ শেষ হওয়ার পরপরই পাকিজা কটন স্পিনিং মিল কর্তৃপক্ষ নদী ভরাট করে রাস্তা নির্মাণ করে।
পানিপ্রবাহের জন্য দুটি পাইপ বসানো হয়েছে, কিন্তু বর্ষায় ব্রহ্মপুত্রের কতটুকু পানি দুটি পাইপ দিয়ে প্রবাহিত হতে পারবে? ফলে এক পাশে জলাবদ্ধতা সৃষ্টির আশঙ্কা রয়েছে। তা ছাড়া নদীর পারের ঢালাই করা রাস্তাটি শেখেরচর-মাধবদী বাইপাস সড়ক হিসেবে ব্যবহার করছিল স্থানীয় মানুষ। সেই সড়কটি বন্ধ করে দেওয়ায় অর্থনৈতিকভাবে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এই এলাকাটির হাজার হাজার মানুষকে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। আর সেই সড়কের ওপর ভবনই বা নির্মাণ করা হয় কিভাবে? কিন্তু মিল কর্তৃপক্ষ অত্যন্ত প্রভাবশালী হওয়া স্থানীয় মানুষ প্রতিবাদ করারও সাহস পাচ্ছে না। সারা দেশেই নদী দখল, দূষণ ও ভরাটের প্রক্রিয়া দিন দিন বেড়েই চলেছে।
বিদ্যমান আইন অনুযায়ী, কোনোভাবেই নদীর প্রবাহ বন্ধ করা যাবে না কিংবা কোনো ধরনের প্রতিবন্ধকতা তৈরি করা যাবে না। উচ্চ আদালত নদীকে ‘জীবন্ত সত্তা’ ঘোষণা করেছেন। কিন্তু এভাবে বাঁধ দিয়ে নদীর প্রবাহ রোধ করা জীবন্ত সত্তাকে হত্যা করার শামিল নয় কি? জেলা প্রশাসন থেকে আশ্বাস দেওয়া হয়েছে, দ্রুততম সময়ে বাঁধ ও স্থাপনা অপসারণ করা হবে। আমরাও চাই, দ্রুত ব্রহ্মপুত্র নদের পানিপ্রবাহ বাধামুক্ত হোক। 
সাবস্ক্রাইব
Notify of
guest
0 মন্তব্য
Inline Feedbacks
View all comments
Advertisements
সর্বশেষ
- Advertisements -
এ বিভাগে আরো দেখুন