English

23 C
Dhaka
মঙ্গলবার, মে ৭, ২০২৪
- Advertisement -

বৃক্ষসম্পদ রক্ষায় উদ্যোগ নিন: দুর্গাপুরে অবৈধ করাতকলের ছড়াছড়ি

- Advertisements -
সুস্থভাবে বেঁচে থাকার জন্য কোনো দেশের মোট ভূখণ্ডের ২৫ শতাংশ বনভূমি থাকা প্রয়োজন। কোনো কোনো বিশেষজ্ঞের মতে, বাংলাদেশে প্রকৃত বনভূমি রয়েছে ৫ শতাংশেরও কম। তা-ও দ্রুত হ্রাস পাচ্ছে। সারা দেশে যেখানেই বন আছে তার আশপাশেই রয়েছে প্রচুর অবৈধ করাতকল।
বনজ ও নানা ধরনের কাঠগাছের পাশাপাশি ফলদগাছও প্রচুর পরিমাণে চেরাই হচ্ছে এসব করাতকলে। প্রকাশিত খবরে দেখা যায়, নেত্রকোনার দুর্গাপুরে পৌরসভাসহ সাতটি ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায় মোট ৪৭টি করাতকল রয়েছে, তার মধ্যে ৪০টিরই কোনো ধরনের লাইসেন্স কিংবা অনুমতি নেই। এগুলোতে দিনরাত কাঠ চেরাই চলছে। ধ্বংস হচ্ছে এলাকার বৃক্ষসম্পদ।
দুর্গাপুর সীমান্তঘেঁষা একটি উপজেলা। এখানে সরকারি বনের পাশাপাশি ব্যক্তিগত জমিতেও প্রচুর গাছপালা রয়েছে। সোমেশ্বরী নদীর কোলে সুন্দর একটি ছায়াঘেরা পরিবেশ ছিল। সেই পরিবেশ এখন অনেকটাই অতীত।
তার পরও যা আছে, তা দেশের অনেক এলাকার চেয়ে ভালো।
সে কারণে দেশ-বিদেশের বহু পর্যটকের আনাগোনা হয় এলাকাটিতে। কিন্তু এভাবে করাতকলের হানা চলতে থাকলে খুব শিগগির এর বিবর্ণ চেহারাই দেখতে পাবে পর্যটকরা। স্থানীয় বন বিভাগের তথ্য মতে, দুর্গাপুর পৌরসভা এবং উপজেলার কুল্লাগড়া, চণ্ডীগড়, বিরিশিরি, বাকলজোড়া, কাকৈরগড়া ও গাঁওকান্দিয়া ইউনিয়নে সব মিলিয়ে করাতকল রয়েছে ৪৭টি, যার মধ্যে লাইসেন্স রয়েছে মাত্র সাতটির আর ১২টি করাতকল লাইসেন্সের জন্য আবেদন করেছে। কিন্তু আবেদন করেই কেউ ব্যবসা চালাতে পারে না।

তার পরও বছরের পর বছর এই ৪০টি করাতকল চলছে কিভাবে? বন বিভাগ ও স্থানীয় প্রশাসন কী করছে? অভিযোগ আছে, সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের নিয়মিত অর্থ প্রদান করেই এসব করাতকল চালানো হয়। এর ফলে একদিকে সরকার রাজস্ব হারাচ্ছে, অন্যদিকে উপযুক্ত নজরদারির অভাবে ধ্বংস হচ্ছে মূল্যবান বনাঞ্চল।

বনভূমির ১০ কিলোমিটারের মধ্যে কোনো করাতকল স্থাপনের বিধান নেই। বাস্তবে দেখা যায়, বনভূমির দুই-তিন কিলোমিটারের মধ্যেই বেশির ভাগ করাতকল স্থাপন করা হয়। শুধু নেত্রকোনা নয়, সারা দেশের চিত্র একই রকম। বিভিন্ন সময় প্রকাশিত খবরে দেখা গেছে, ভাওয়াল, মধুপুর, শ্রীমঙ্গল, দিনাজপুর, পঞ্চগড়সহ আরো অনেক স্থানেই এ রকম অসংখ্য অবৈধ করাতকল রয়েছে। কিন্তু এই ধ্বংসাত্মক প্রবণতা রোধের কার্যকর কোনো প্রচেষ্টা দেখা যায় না।

দেশ অর্থনৈতিকভাবে এগিয়ে যাচ্ছে। উন্নয়নশীল থেকে উন্নত দেশ হওয়ার স্বপ্ন দেখছি। কিন্তু বনভূমিহীন সেই দেশে মানুষ সুস্থভাবে জীবন যাপন করতে পারবে কি? এখনো সময় আছে দেশকে বৃক্ষসম্পদে সমৃদ্ধ করার। এ জন্য অবৈধ করাতকলের ধ্বংসাত্মক প্রক্রিয়া বন্ধ করতে হবে। বৈধ করাতকলের ওপরও নজরদারি বাড়াতে হবে। যেকোনো মূল্যে বনভূমির ধ্বংস ঠেকাতে হবে।

সাবস্ক্রাইব
Notify of
guest
0 মন্তব্য
Inline Feedbacks
View all comments
Advertisements
সর্বশেষ

আল কোরআন ও আল হাদিস

- Advertisements -
এ বিভাগে আরো দেখুন