English

27 C
Dhaka
সোমবার, মে ৬, ২০২৪
- Advertisement -

মোকাবেলায় জরুরি উদ্যোগ নিন: রক্তের ক্যান্সার বেশির ভাগ শিশুর

- Advertisements -
পরিবেশদূষণ, খাদ্যে ভেজাল, জীবনযাত্রার ধরনে পরিবর্তনসহ নানা কারণে বিশ্বব্যাপী ক্যান্সার আক্রান্তের সংখ্যা ক্রমেই বাড়ছে। বাংলাদেশে ক্যান্সার নির্ণয়ের ব্যাপকভিত্তিক আয়োজন (স্ক্রিনিং) নেই বললেই চলে। ফলে আক্রান্তের সংখ্যা নিয়ে সঠিক কোনো পরিসংখ্যানও পাওয়া যায় না। কোনো কোনো হাসপাতালে বিচ্ছিন্ন কিছু কাজ হয়েছে। তার ভিত্তিতে কিছুটা ধারণা পাওয়া যায় মাত্র। ধারণা করা হয়, বাংলাদেশে বছরে দেড় লাখের বেশি মানুষ ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়। এর মধ্যে শিশুদের ক্যান্সারে আক্রান্তের হারও ঊর্ধ্বমুখী। যত শিশু ক্যান্সারে আক্রান্ত হয় তার শতকরা ৮০ ভাগই আক্রান্ত হয় রক্তের ক্যান্সারে।এমন পরিস্থিতিতে বুধবার সারা বিশ্বের মতো বাংলাদেশেও পালিত হয়েছে বিশ্ব শিশু ক্যান্সার দিবস। দিবসটি পালনের উদ্দেশ্য হচ্ছে শিশুদের ক্যান্সার সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি। কিন্তু এ ব্যাপারে আমরা কতটুকু সচেতন হচ্ছি?

বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের মতে, প্রাথমিক অবস্থায় শিশুদের ক্যান্সার শনাক্ত করা গেলে শতকরা ৯৫ ভাগ শিশুকেই সুস্থ করা সম্ভব। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনক যে বেশির ভাগ রোগীকে হাসপাতালে নিয়ে আসা হয় রোগের শেষ ধাপে, যখন চিকিৎসকদের করার আর কিছুই থাকে না। এর জন্য রোগীর অভিভাবকরা যেমন দায়ী, তেমনি দায়ী দেশের প্রচলিত চিকিৎসাব্যবস্থা।

রোগের প্রথম অবস্থায় এখনো অনেক অভিভাবক ঝাড়ফুঁক, কবিরাজি কিংবা হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা দিয়ে থাকেন শিশুদের। আবার অনেকে আশপাশে থাকা ক্লিনিক বা চিকিৎসকের কাছে গেলেও তাঁরা রোগ নির্ণয়ে যথেষ্ট আন্তরিকতা দেখান না। রোগীর ইতিহাস নিলে দেখা যায়, চূড়ান্ত পর্যায়ে ক্যান্সার নির্ণয়ের আগেও তারা বেশ কয়েকজন চিকিৎসককে দেখিয়েছে বা হাসপাতালে গেছে। তাঁরা রোগ ধরতে পারেননি। তাই বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, সারা দেশে রোগ নির্ণয় ও চিকিৎসার আধুনিক ব্যবস্থা থাকা প্রয়োজন।

সরকারি হাসপাতালে রোগ নির্ণয় ও চিকিৎসাসংক্রান্ত যন্ত্রপাতিরও অভাব রয়েছে। যন্ত্রপাতি অচল হয়ে পড়ে থাকে। রোগীরা সেবা পায় না। আবার ক্যান্সারের চিকিৎসা ব্যয়বহুল হওয়ায় বেশির ভাগ রোগীর পরিবারের পক্ষে বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা করানোর সামর্থ্য থাকে না।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, প্রতি ১০ লাখ মানুষের জন্য একটি সমন্বিত ক্যান্সার চিকিৎসাকেন্দ্র থাকা দরকার, যেখানে রোগ নির্ণয় ও চিকিৎসার সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা থাকবে। কিন্তু আমাদের আছে মাত্র ৩৩টি কেন্দ্র, তা-ও পূর্ণাঙ্গ নয়। অনেক কেন্দ্র চলে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে।

দেশে ক্যান্সার চিকিৎসার সুযোগ এখনো মূলত ঢাকা মহানগরীতে সীমিত। ফলে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে রোগীদের ঢাকায় ছুটে আসতে হয়। এটি দীর্ঘমেয়াদি চিকিৎসা হওয়ায় রোগীর স্বজনদের বাসা ভাড়া করে ঢাকায় অবস্থান করতে হয়। এতেও দরিদ্র রোগীর পরিবার সর্বস্বান্ত হয়ে একসময় চিকিৎসা শেষ না করেই ফিরে যেতে বাধ্য হয়। তাই ক্যান্সার চিকিৎসার সুযোগ দেশব্যাপী ছড়িয়ে দেওয়াটা অত্যন্ত জরুরি।অন্ততপক্ষে জেলা পর্যায়ে এই সুযোগ থাকাটা অত্যন্ত প্রয়োজন। পাশাপাশি ক্যান্সার নিয়ে, বিশেষ করে শিশুদের ক্যান্সার নিয়ে সচেতনতা তৈরির জন্যও দেশব্যাপী ব্যাপক উদ্যোগ নিতে হবে, যাতে সামান্য লক্ষণ দেখলেই স্বজনরা রোগীদের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের কাছে নিয়ে যেতে পারে। একই সঙ্গে রোগ নির্ণয় ও চিকিৎসার সুযোগ-সুবিধা বাড়াতে হবে।
সাবস্ক্রাইব
Notify of
guest
0 মন্তব্য
Inline Feedbacks
View all comments
Advertisements
সর্বশেষ
- Advertisements -
এ বিভাগে আরো দেখুন