English

38 C
Dhaka
শুক্রবার, এপ্রিল ২৬, ২০২৪
- Advertisement -

সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে তদারকি বাড়ান: চালের বাজারে অস্থিরতা

- Advertisements -
Advertisements
Advertisements

কথায় বলে, ‘সময়ের এক ফোঁড়, অসময়ের দশ ফোঁড়’। সঠিক সময়ে সঠিক পদক্ষেপ না নেওয়ার ফলে চালের বাজারে অস্থিরতা বিরাজ করছে। সরকারের প্রথম ভুল ছিল বোরোর ফলন ভালো হওয়া সত্ত্বেও ধান-চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করতে না পারা। দ্বিতীয় ভুল হলো কৃষক, আড়তদার ও চালকলের মালিকদের কাছে কী পরিমাণ ধান-চাল আছে, সেই তথ্য না থাকা। এ অবস্থায় সরকারের পদক্ষেপ অনেকটা অন্ধের হাতি দর্শনের মতো।
গত মঙ্গলবার খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার ও চালকলের মালিকদের মধ্যকার বৈঠকে মিলগেটে চালের দাম নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে। নতুন দর অনুযায়ী, প্রতি কেজি সরু মিনিকেট চাল ৫১ টাকা ৫০ পয়সায় আর প্রতি ৫০ কেজির বস্তা ২ হাজার ৫৭৫ টাকায় বিক্রি করতে হবে। মাঝারি মানের চাল প্রতি কেজি ৪৫ টাকা এবং বস্তা ২ হাজার ২৫০ টাকায় বিক্রি করতে হবে। এর আগে এর চেয়ে বেশি দামেই মিলমালিকেরা চাল বিক্রি করতেন।
মুক্তবাজার অর্থনীতিতে এভাবে দাম বেঁধে দিয়ে চালের বাজার স্থিতিশীল রাখা যাবে কি না, সে বিষয়ে সন্দেহ আছে। ওই বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছিল, বুধবার থেকে দেশের সব চালকলের মালিকদের নির্ধারিত দামে চাল বিক্রি করতে হবে। পরদিন বুধবার বিভিন্ন স্থান থেকে যেসব খবর পাওয়া গেছে, তা আশাপ্রদ নয়। সরকারের বেঁধে দেওয়া দামে সব মিলে চাল বিক্রি হয়নি। যেখানে হয়েছে, সেখানেও চাল বিক্রি ও সরবরাহের পরিমাণ অনেক কম ছিল। মিলমালিকদের বক্তব্য হলো কৃষক ও আড়তদারদের কাছ থেকে তাঁরা বেশি দামে ধান কিনছেন। ফলে নির্ধারিত দামে চাল সরবরাহ করা সম্ভব হচ্ছে না। কম দামে ধান কিনতে পারলে তাঁরাও কম দামে চাল সরবরাহ করতে পারবেন।
গণমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম চালের মোকাম কুষ্টিয়ার খাজানগর থেকে গড়ে প্রতিদিন ১৫০টি ট্রাকে চাল সরবরাহ করা হয়। কিন্তু বৃহস্পতিবার গেছে মাত্র ৫০টি ট্রাক। মিল থেকে চালের সরবরাহ কম হলে বাজার আরও অস্থিতিশীল হয়ে উঠতে পারে।
বুধবার নির্ধারিত দামে চাল বিক্রির সিদ্ধান্ত নেওয়ার পর বাজারে এর কোনো প্রভাব পড়েনি। সরকারি সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) হিসাবে মঙ্গলবার রাজধানীতে সরু চাল ৫২ থেকে ৬০ টাকা, মাঝারি চাল ৪৫ থেকে ৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে। আর মোটা চাল ৪২ থেকে ৪৮ টাকায় বিক্রি করেছেন ব্যবসায়ীরা। গত এক মাসে মোটা চালের দাম প্রায় ৬ শতাংশ বেড়েছে। সরু ও মাঝারি চালের দামও বাড়তির দিকে।
সচলতি বছর বোরোর ফলন ভালো হলেও বন্যা ও আম্পানের কারণে আমন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। নভেম্বরে আমন ধান কাটা হবে। অন্তত ওই সময় পর্যন্ত বাজার যাতে স্থিতিশীল থাকে, সে জন্য সরকারকে খোলাবাজারে চালের বিক্রি বাড়াতে হবে। প্রয়োজনে বিদেশ থেকে আমদানি করতে হবে। কোনো সদুপদেশ কিংবা দাম বেঁধে দেওয়ার চেয়ে বাজার নিয়ন্ত্রণে সেটাই অধিকতর কার্যকর ভূমিকা রাখবে। করোনার কারণে সাধারণ মানুষের আয়-রোজগার কমে গেছে। এর ওপর চালের দাম বৃদ্ধি বাড়তি চাপে ফেলেছে।
খাদ্যমন্ত্রী বলেছেন, চাল নিয়ে কোনো ধরনের কারসাজি সরকার বরদাশত করবে না। তাঁর এই হুঁশিয়ারি সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ও সংস্থা কতটা আমলে নেয়, তার ওপরই নির্ভর করছে চালের বাজার স্থিতিশীল থাকবে কি থাকবে না। চালের দাম বাড়ার জন্য মিলমালিক ও আড়তদারেরা একে অপরের ওপর দায় চাপাচ্ছেন। প্রকৃত দায় কার, তা নির্ধারণ করার এবং চালের বাজারের অস্থিতিশীলতা দূর করার দায়িত্ব সরকারের। সে জন্য প্রয়োজন সার্বক্ষণিক তদারকি।

সাবস্ক্রাইব
Notify of
guest
0 মন্তব্য
Inline Feedbacks
View all comments
Advertisements
সর্বশেষ
- Advertisements -
এ বিভাগে আরো দেখুন