সারা দেশে সরকারি-বেসরকারি নির্মাণকাজের পরিমাণ ক্রমেই বাড়ছে। তার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে মাটি, বালু, ইট ও পাথরের চাহিদা। এসব নির্মাণসামগ্রী সরবরাহে গড়ে উঠেছে অসংখ্য সিন্ডিকেট, যার বেশির ভাগই অবৈধ। এরা নদী, খাল, পাহাড়ি ছড়া, এমনকি কৃষিজমি থেকে অবৈধভাবে মাটি ও বালু উত্তোলন করছে। সিলেট ও অন্যান্য সীমান্ত এলাকায় গড়ে উঠেছে অসংখ্য পাথর কোয়ারি। প্রতিদিন কোটি কোটি টাকার ব্যবসা হচ্ছে। কিন্তু সেসবের ওপর সরকারের নিয়ন্ত্রণ নেই বললেই চলে।
এতে সরকার যেমন বিপুল রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে, তেমনি নদীভাঙন, পাহাড়ধস ত্বরান্বিত হচ্ছে। সাধারণ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। গতকাল এমনই একটি খবর প্রকাশিত হয়েছে । খবরে বলা হয়, রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলার দৌলতদিয়া ফেরিঘাটের পাশে পদ্মা নদীর তীর থেকে অবৈধভাবে বালু ও কৃষিজমির মাটি কেটে নিয়ে বিক্রি করা হচ্ছে। এতে হুমকির মুখে পড়েছে গুরুত্বপূর্ণ ফেরিঘাটসহ পাশের দুটি গ্রাম। আগামী বর্ষায় ফেরিঘাটসহ গ্রাম দুটি ভাঙনের মুখে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছে স্থানীয়রা।
গণমাধ্যমে প্রতিনিয়ত এ ধরনের অবৈধ তৎপরতার খবর প্রকাশিত হচ্ছে। অনেক সময় এভাবে অপরিকল্পিত মাটি ও বালু উত্তোলনের ফলে নদীর তীর রক্ষা বাঁধ ধসে পড়ছে। বন্যা ও নদীভাঙন তীব্র হচ্ছে। কখনো সেতু-কালভার্ট হুমকির মুখে পড়ছে। জানা যায়, কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারীতে দুধকুমার নদ থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করায় সেখানে থাকা শতবর্ষী সোনাহাট রেল সেতুটি হুমকিতে পড়েছে। কৃষিজমি থেকে মাটি কেটে পুকুর বানিয়ে ফেলা হচ্ছে।
পাশের কৃষিজমির মাটি ধসে পড়ছে। এসব সিন্ডিকেট এখন খননযন্ত্র, মাটি পরিবহনের ড্রাম ট্রাকসহ আধুনিক যন্ত্রপাতি ব্যবহার করছে। এরা স্থানীয়ভাবে এতটাই প্রভাবশালী যে স্থানীয় লোকজন এদের বিরুদ্ধে মুখ খুলতেও ভয় পায়। আর অজ্ঞাত কারণে স্থানীয় প্রশাসনও এদের এই অবৈধ কর্মকাণ্ড দেখতে পায় না। তাহলে নদীতীরের গ্রামবাসী, দরিদ্র কৃষক কার কাছে প্রতিকার চাইবে?