English

28 C
Dhaka
মঙ্গলবার, সেপ্টেম্বর ১৭, ২০২৪
- Advertisement -

চলচ্চিত্রকার-মুক্তিযোদ্ধা উদয়ন চৌধুরীর ২০তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ

- Advertisements -

এ কে আজাদ: উদয়ন চৌধুরী। চলচ্চিত্র পরিচালক-কাহিনীকার-সংলাপ রচয়িতা-চিত্রনাট্যকার ও সাংবাদিক। অবিভক্ত বাংলার কোলকাতায় চলচ্চিত্র নির্মাণ, অভিনয় ও চলচ্চিত্র সাংবাদিকতায় বাঙ্গালী মুসলমানদের মধ্যে অন্যতম অগ্রপথিক তিনি। ঢাকায় নির্মিত বহু ভালোমানের চলচ্চিত্রের কাহিনী-সংলাপ ও চিত্রনাট্য লিখেছেন। তাঁর লেখা বেশীরভাগ চলচ্চিত্রই যেমন জনপ্রিয় ও ব্যবসাসফল, তেমনই সুধীমহল কর্তৃক প্রশংসিত হয়েছে।

চলচ্চিত্র সম্পর্কে তাঁর ছিল অগাধ পাণ্ডিত্য। বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধেও অংশগ্রহণ করেন, এই বীর মুক্তিযোদ্ধা।

চলচ্চিত্রকার-মুক্তিযোদ্ধা উদয়ন চৌধুরী’র ২০তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ। তিনি ২০০৪ সালের ৮ মার্চ, ৮৬ বছর বয়সে, ঢাকায় মৃত্যুবরণ করেন। বরেণ্য এই চলচ্চিত্র ব্যক্তিত্বের প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা জানাই। তাঁর বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করছি।

উদয়ন চৌধুরী (আসল নাম- ইসমাইল মোহাম্মদ) ১৯১৮ সালের ২৮ মে, ঢাকার ওয়ারিতে জন্মগ্রহন করেন। তাঁর পিতার নাম মুনশী আব্দুল লতিফ এবং মাতার নাম মোসামৎ সায়েরা খাতুন। তাঁরা ছিলেন দুই ভাই এক বোন। তাঁর ছোট ভাই ইসলাম আহমেদ তৎকালীন ‘ঢাকা রেডিও’র প্রথম বাঙ্গালী মুসলমান অনুষ্ঠান ঘোষক ছিলেন।

Advertisements

স্কুল জীবন থেকেই লেখালেখি ও নাটক থিয়েটারের প্রতি তাঁর ঝোঁক ছিল । ইন্টারমিডিয়েট পাস করার পর কলকাতায় চলে যান। সেখানে গিয়ে চাকরির পাশাপাশি তিনি ইসলামিয়া কলেজ থেকে ডিগ্রী পাস করেন ।

৪০-এর দশকে গুণময় বন্দোপাধ্যায় পরিচালিত ‘মাতৃহারা’ ছবি’র সহকারী পরিচালক হিসেবে কলকাতার চলচ্চিত্রে তিনি প্রথম কাজ শুরু করেন।

প্রথম বাঙ্গালী মুসলমান হিসেবে বাণিজ্যিক ভিত্তিতে কলকাতায় তিনি ‘জোয়ার’ নামে একটি নাটক মঞ্চস্থ করেন, ১৯৪৪ সালে । পরে আরো কিছু নাটক করেন তিনি।

কলকাতায় তাঁর প্রথম পরিচালিত ছবি ‘মানুষের ভগবান’ এর কাজ ১৯৪৬ সালে শেষ হলেও ছবির নাম ও বিষয়বস্তু নিয়ে সেন্সর বোর্ড আপত্তি করে – ফলে মুক্তি নিয়ে জটিলতার সৃষ্টি হয় । এরপরে চলচ্চিত্রটির নাম পরিবর্তন করে ‘আলোড়ন’ নাম দিয়ে মুক্তি দেয়ার চেষ্টা করা হলেও তিনি সফল হননি। সামাজিক কুসংস্কার, অসংগতি আর লুটেরাদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদী চলচ্চিত্র ছিল ‘মানুষের ভগবান’। যার কারণে তাঁকে সরকারি রোষানলে পড়ে জেল খাটতে হয়েছিল । পরবর্তিতে ‘নতুনেরই জোয়ার এলো’ এবং ‘রাজা রামমোহন রায়’ নামে আরো দু’টি ছবি’র কাজ শুরু করেছিলেন তিনি কলকাতায়, তাও শেষ পর্যন্ত হয়নি।

ঢাকায় এসে ১৯৬০ সালে তিনি ‘বিষকন্যা’ নামে একটি চলচ্চিত্র নির্মানের কাজ শুরু করেন। কিন্তু শেষপর্যন্ত ছবিটি হয়নি। এরপর তাঁর তত্ত্বাবধানে নির্মিত হয় ‘পুণম কী রাত’ ছবিটি, মুক্তি পায় ১৯৬৬ সালে।
ঢাকায় তাঁর পরিচালিত প্রথম ছবি মুক্তি পায় ১৯৬৮ সালে, ছবি’র নাম ‘চোরাবালি’। তিনি আরো দু’টি ছবি পরিচালনা করেন, একটি ‘নায়িকা’ (১৯৭০) অন্যটি ‘ডাক দিয়ে যাই’ (মুক্তি পায়নি)।

Advertisements

উদয়ন চৌধুরী’র কাহিনী-চিত্রনাট্য ও সংলাপ নিয়ে, বাংলাদেশের অনেক খ্যাতিমান নির্মাতা চলচ্চিত্র নির্মাণ করেছেন। তাঁর কাহিনী-চিত্রনাট্য ও সংলাপ নিয়ে নির্মিত চলচ্চিত্রের মধ্যে রয়েছে- পুনম কি রাত, এতটুকু আশা, চোরাবালি, দীপ নিভে নাই, নায়িকা, পুত্রবধূ, ভাঙ্গাগড়া, লালুভুলু, বিসর্জন, নীল আকাশের নীচে, আলোর মিছিল, সমাধান, মেঘের অনেক রঙ, আওয়ারা, ডাক দিয়ে যাই, মা ও ছেলে, অনুরাগ, গৃহলক্ষী, কাজল রেখা, সবার উপরে মা, আবদার, পরমপ্রিয়, ইত্যাদি ।

বাংলাদেশের চলচ্চিত্রে বিশেষ অবদানের স্বীকৃতি স্বরূপ তিনি পেয়েছেন, জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার, বাংলাদেশ চলচ্চিত্র সাংবাদিক সমিতি’র চলচ্চিত্র পুরস্কার এবং গুনীজন সম্বর্ধনা’সহ নানাবিধ সম্মাননা।

উদয়ন চৌধুরী, আমাদের জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম সম্পাদিত ‘নবযুগ’ পত্রিকায় কাজ করেছেন এবং একসময় ‘নবযুগ’ পত্রিকার সহকারী সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেছেন। এছাড়া ‘সত্যযুগ’ এবং ‘কাফেলা’ নামে পত্রিকায় কাজ করেছেন। বিখ্যাত সাহিত্যি পত্রিকা ‘সমকাল’-এর সম্পাদকও ছিলেন একসময়।

তাঁর লেখা কয়েকটি গ্রন্থও প্রকাশিত হয়েছে, সেগুলো হলো- জোয়ার এলো, ওমর খৈয়াম, ভারতীয় স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাস, নাট্যকলার ক্রমবিকাশ, প্রভৃতি।

চলচ্চিত্র পরিচালক, কাহিনীকার, সংলাপ রচয়িতা, চিত্রনাট্যকার, সাহিত্যিক, সাংবাদিক, লেখক, নাট্যকার, অভিনেতা, সংগঠক এবং মুক্তিযোদ্ধা উদয়ন চৌধুরী । বাংলাদেশের চলচ্চিত্রে ও মুক্তিযুদ্ধে তাঁর অবদান চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে।

সাবস্ক্রাইব
Notify of
guest
0 মন্তব্য
সবচেয়ে পুরাতন
সবচেয়ে নতুন Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments
Advertisements
সর্বশেষ

আল কোরআন ও আল হাদিস

আজকের রাশিফল

- Advertisements -
এ বিভাগে আরো দেখুন