English

36 C
Dhaka
শনিবার, মে ৪, ২০২৪
- Advertisement -

দেশবরেণ্য সুরকার-সঙ্গীত পরিচালক ও আনোয়ার পারভেজ-এর ১৫তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ

- Advertisements -

দেশবরেণ্য সুরকার-সঙ্গীত পরিচালক ও আনোয়ার পারভেজ-এর ১৫তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ। তিনি ২০০৬ সালের ১৭ জুন, ঢাকায় ইন্তেকাল করেন । মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৬২ বছর। গুণি এই সঙ্গীতজ্ঞর প্রতি বিন্ম্র শ্রদ্ধা জানাই। তাঁর বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করি।

আনোয়ার পারভেজ ১৯৪৪ সালে ঢাকায় জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর বাবার নাম, এম ফজলুল হক, মা আসিয়া হক।
তাঁর বোন শাহনাজ রহমতুল্লাহ ছিলেন প্রখ্যাত কন্ঠশিল্পী। ছোট ভাই জাফর ইকবাল ছিলেন, জনপ্রিয় চিত্রনায়ক। খ্যাতিমান চলচ্চিত্র পরিচালক ইবনে মিজান তাঁর মামা। তাঁর স্ত্রী জেসমিন পারভেজ ছিলেন অভিনেত্রী।

ছোটবেলা থেকেই সঙ্গীতের প্রতি তাঁর প্রবল ঝোঁক ছিল। এক সময় প্রখ্যাত মিউজিশিয়ান করিম শাহাবুদ্দিনের সংস্পর্শে আসেন তিনি। আনোয়ার পারভেজ ষাটের দশকে পেশাদার সঙ্গীত জীবন শুরু করেন, চট্টগ্রাম বেতারে সুরকার হিসেবে যোগ দেন৷

Advertisements

পরবর্তিতপ ঢাকায় এসে বিভিন্ন মাধ্যমে সঙ্গীত পরিচালনা করেন আনোয়ার পারভেজ। ‘চাঁদ আওর চাঁদনী’ ও ‘বাবলু’ ছবিতে করিম শাহাবুদ্দিনের সহযোগী সঙ্গীত পরিচালক হিসেবে প্রথম চলচ্চিত্রে কাজ করেন তিনি।
তাঁর একক সুর ও সঙ্গীত পরিচালনায় প্রথম ছবি ‘বিন্দু থেকে বৃত্ত’ মুক্তিপায় ১৯৭০ সালে।
আনোয়ার পারভেজ আরো যেসব চলচ্চিত্রের সুর ও সঙ্গীত পরিচালনা করেছেন তারমধ্যে উল্লেখযোগ্য- জয় বাংলা, কত যে মিনতি, ছন্দ হারিয়ে গেল, রংবাজ, বেঈমান, বিচার, বন্দিনী, শনিবারের চিঠি, দি রেইন, মাটির মায়া, কার পাপে, রং বেরং, সাহেব বিবি গোলাম, রূপের রাণী চোরের রাজা, জোকার, বেদ্বীন, লুটেরা, মোকাবেলা, ওমর শরীফ, সোহাগ মিলন, ডার্লিং, মধু মালতী, মানসী, বদনাম, ঘরের বউ, স্বামীর ঘর, সোনার হরিণ, তালাক, সেলিম জাভেদ, সকাল সন্ধ্যা, অভিযান, রাজিয়া সুলতানা, ঘরে বাইরে, সুখ-দুঃখের সাথী, মা-বাবা, মাটির কোলে, হিমালয়ের বুকে, ঢাকা-৮৬, জবরদস্ত, জীনের বাদশা, ছুটির ফাঁদে, মৌমাছি, সাবাশ বাঙ্গালী, বউ শাশুড়ীর যুদ্ধ, ইত্যাদি।

অসংখ্য জনপ্রিয় কালজয়ী গানের সুরস্রষ্টা আনোয়ার পারভেজ। তাঁর সুরারোপিত বহুল জনপ্রিয় ও কালজয়ী গানগুলোর মধ্যে- আমি সাত সাগরের ওপার হতে…, যেভাবে বাচিঁ বেচেঁ তো আছি…, জয় বাংলা বাংলার জয়…., একতারা তুই দেশের কথা বলরে এবার বল…., একবার যেতে দে না আমার ছোট্ট সোনার গাঁয়…., সে যে কেন এলো না কিছু ভালো লাগে না…, হৈ হৈ হৈ রঙিলা রঙিলা রঙিলারে..,আমি তো বন্ধু মাতাল নই…, এই পথে পথে, আমি একা চলি…., ইশারায় শিষ দিয়ে আমাকে ডেকো না…, আমি ধন্য হয়েছি ওগো ধন্য…, হয় যদি বদনাম হোক আরো….,মাটির কোলে খাটি মানুষ খুঁজে পাওয়া দায়রে…, অন্যতম।

আনোয়ার পারভেজ-এর সুর করা “জয় বাংলা বাংলার জয়” (‘জয় বাংলা’ ছবির জন্য করা) গানটি বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধকালে স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র থেকে প্রচারিত বিভিন্ন দেশাত্মবোধক গানের মধ্যে সবচেয়ে বেশী উদ্দীপনাময় ও জনপ্রিয় ছিল৷

২০০৫ সালে বিবিসিবাংলার এক জরিপে সর্বকালের সেরা ২০টি বাংলা গানের তালিকায়, আনোয়ার পারভেজ সুরারোপিত ৩টি গান স্থান পেয়েছে। গানগুলো হলো- ‘জয় বাংলা বাংলার জয়’, ‘একবার যেতে দে না আমার ছোট্ট সোনার গাঁয়’ এবং ‘একতারা তুই দেশের কথা বলরে এবার বল’।

Advertisements

বাংলাদেশের সঙ্গীতে বিশেষ অবদানের জন্য সরকার তাঁকে ২০০৭ সালে, একুশে পদকে ভূষিত (মরণোত্তর) করে।

কালোত্তীর্ণ বহু গানের সুরকার আনোয়ার পারভেজ। একজন সংগ্রামী সুরকার ছিলেন আনোয়ার পারভেজ। চলচ্চিত্রে অনেক হিট-সুপারহিট গানের স্রষ্টা তিনি।
জনপ্রিয়তার শীর্ষে থাকা একজন সুরকার আনোয়ার পারভেজ। প্রতিভাবান এই সঙ্গীতজ্ঞ আমাদের দিয়ে গেছেন, শ্রুতিমধুর সুরের অসংখ্য ভালো গান । অথচ আমরা তাঁর জীবদ্দশায় তাঁকে যথাযথ সম্মান- স্বীকৃতি কিছুই দিতে পারিনি। একজন দেশপ্রেমিক সঙ্গীতজ্ঞ, তাঁর কাজের যথাযথ স্বীকৃতি না পেয়ে, পুঞ্জিভূত পাহাড়সম অভিমান বুকে নিয়ে নিরবে-নিভৃতে চলে গেছেন জীবনের সীমানা ছাড়িয়ে।

বাংলাদেশের সঙ্গীতে আনোয়ার পারভেজ-এর অবদান অবিস্মরণীয় হয়ে থাকবে।

সাবস্ক্রাইব
Notify of
guest
0 মন্তব্য
Inline Feedbacks
View all comments
Advertisements
সর্বশেষ
- Advertisements -
এ বিভাগে আরো দেখুন