English

29.1 C
Dhaka
সোমবার, জুলাই ২১, ২০২৫
- Advertisement -

‘পুলিশের প্রশিক্ষণ’ পাওয়া চোর গ্রেফতার, সঙ্গে গুরুও

- Advertisements -

চলন্ত ট্রেনে যাত্রীদের মালামাল চুরির তদন্তে নেমে এক দাগী চোরকে গ্রেফতার করেছে বেঙ্গালুরুর রেল পুলিশ। তবে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে গিয়ে চোখ ছানাবড়া কর্মকর্তাদের। কারণ তারা জেনেছেন, সুনিপুণভাবে চুরি করার জন্য ওই চোরকে প্রশিক্ষণ দিয়েছিলেন যিনি, তিনি নিজেও এক পুলিশ কর্মকর্তা। ঠিক যেন ‘সর্ষের মধ্যেই ভূত’!

তদন্তের পর সেই প্রশিক্ষক বা গুরুকেও গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

ঘটনার শুরু যেভাবে
বেঙ্গালুরু রেল পুলিশের এসপি এসকে সুমনলথা জানান, গত অক্টোবর মাসে চুরির শিকার এক নারীর অভিযোগের প্রেক্ষাপটে পুলিশ অনুসন্ধান শুরু করে। এরপরই এই চাঞ্চল্যকর ‘চোর-পুলিশ’ জুটির ঘটনা বেরিয়ে আসে।

তিনি জানান, গত মাসের ২৩ তারিখ বেঙ্গালুরুর বাসিন্দা এক নারী ত্রিশূর থেকে ফিরছিলেন। ট্রেনটি বায়াপ্পানাহাল্লি স্টেশনের কাছে কিছুটা ধীরগতিতে এগোচ্ছিল। ওই নারীর ব্যাগ রাখা ছিল আসনের ওপরে। সেটাই এক লোক টেনে নিয়ে পালিয়ে যায়।

ওই নারীর দায়ের করা অভিযোগে জানানো হয় যে, তার ব্যাগে প্রায় ১০ লাখ টাকার জিনিপত্র ছিল। পরে পুলিশ তদন্তে নেমে সাবান্না নামে এক চোরকে গ্রেফতার করে।

এসপি সুমনলথা বলেন, এই ব্যক্তি দীর্ঘদিন ধরেই ট্রেনে চুরি-ছিনতাই করে আসছিলেন। এর আগে ২০১২, ২০১৬ ও সবশেষ ২০২২ সালে গ্রেফতার হয়েছিলেন তিনি।

সাম্প্রতিকতম অভিযোগ পাওয়ার পরে পুলিশ বিভিন্ন রেলস্টেশনে নজরদারি শুরু করে। একদিন ভোরের দিকে সন্দেহজনকভাবে স্টেশনে ঘোরাফেরা করতে দেখে সাবান্নাকে আটক করে পুলিশ। এরপর জিজ্ঞাসাবাদে তিনি স্বীকার করেন যে, ওই নারীর ব্যাগ তিনিই চুরি করেছিলেন।

যেভাবে মিললো চোরের ‘গুরু’
সাবান্নাকে জিজ্ঞাসাবাদে পুলিশ জানতে পারে, তার একজন গুরু রয়েছেন, যিনি রীতিমতো প্রশিক্ষণ দিয়ে ‘চুরিবিদ্যা’ শিখিয়েছেন। কীভাবে হাতসাফাইয়ের কাজ করতে হবে আর কীভাবে ধরা না পড়ে বেরিয়ে যেতে হবে- সব হাতেকলমে শিক্ষা দিয়েছেন ওই গুরু।

কোন ধরনের জিনিস নেওয়া উচিত আর কোনটি ফেলে দিতে হবে- শিখন তালিকায় ছিল সেটিও। সঙ্গে বোনাস হিসেবে ছিল- শিষ্যকে হালনাগাদ তথ্য দিয়ে সহায়তা করা। যেমন- কোন বগিতে কে ঘুমাচ্ছে, কার ব্যাগ চুরি করা যেতে পারে ইত্যাদি।

আর এসব তথ্য নিখুঁতভাবে দিতে পারতেন গুরু। কারণ তার কাজই ছিল চলন্ত ট্রেনে ঘুরে ঘুরে যাত্রীদের ওপরে নজর রাখা।

পেশায় তিনি রেল পুলিশের হেড কনস্টেবল! চোর ‘শিষ্য’ সাবান্নার স্বীকারোক্তির সূত্র ধরে এরপর ধরা পড়েন গুরু সিদ্দারামা রেড্ডি।

রেল পুলিশের এসপি জানিয়েছেনন, গ্রেফতার হওয়ার পরে ওই হেড কনস্টেবলকে বরখাস্ত করা হয়েছে।

কীভাবে সাহায্য করতেন ‘গুরু’?
সুমনলথা বলেছেন, চলন্ত ট্রেনে প্রহরার দায়িত্বে থাকতে হেড কনস্টেবল রেড্ডি খেয়াল করতেন, কোন যাত্রী ঘুমাচ্ছেন, কে অসতর্কভাবে ব্যাগ রেখেছেন কোলে বা পায়ের নিচে কিংবা মাথার ওপরে। সুযোগ বুঝে সেই খবর তিনি দিয়ে দিতেন সাবান্নাকে। আর মূল কাজটা হাসিল করতেন সাবান্না।

জিজ্ঞাসাবাদে পুলিশ জানতে পেরেছে, কাজের পদ্ধতি এবং চুরির মালামাল ভাগাভাগিতেও তারা ছিলেন অত্যন্ত সতর্ক। এরা ব্যাগ চুরি করে কেবল টাকাপয়সা, গয়না আর জামাকাপড়ই নিতেন। মোবাইল ফোন, ল্যাপটপ বা কোনো ধরনের বৈদ্যুতিক গ্যাজেট তারা নিজেদের কাছে রাখতেন না।

ফেলে দিতো মোবাইল-ল্যাপটপ
পুলিশে কাজ করার সূত্রে রেড্ডি ভালো করেই জানতেন, বৈদ্যুতিক যন্ত্র খুব সহজেই ট্র্যাক করা যায়। তাই সেসব না রেখে ফেলে দিতো গুরু-শিষ্যের দল।

এসপি সুমনলথা বলেন, চলন্ত ট্রেনে ব্যাগ ছিনতাই করার সময়ে তো আর ব্যাগে কী রয়েছে তা জানতেন তারা। খুঁজে দেখার সুযোগও নেই। ফলে ছিনতাই করার পরে কোনো ব্যাগে যদি কোনো ধরনের বৈদ্যুতিক যন্ত্র পেতো, সেগুলো ঝোপ-জঙ্গলে ফেলে দিত চোরের দল, যাতে এদের ট্র্যাক করা না যায়। এই বুদ্ধিটা গুরু রেড্ডিই দিয়েছিলেন তার শিষ্যকে।

ছিনতাইয়ের শেষে টাকা পয়সা, গয়নাগাটি সব দুজনে ভাগ করে নিতেন গুরু-শিষ্য।

The short URL of the present article is: https://www.nirapadnews.com/jxw1
Notify of
guest
0 মন্তব্য
সবচেয়ে পুরাতন
সবচেয়ে নতুন Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments
Advertisements
সর্বশেষ

আল কোরআন ও আল হাদিস

- Advertisements -
এ বিভাগে আরো দেখুন