English

15 C
Dhaka
সোমবার, ডিসেম্বর ২৯, ২০২৫
- Advertisement -

কোমরের ডিস্ক সরে গেলে যা করবেন

- Advertisements -

সায়াটিক নার্ভ নামে একটি স্নায়ু রয়েছে আমাদের দেহে। এটি মেরুদণ্ডের কোমরের অংশ থেকে উৎপত্তি হয়ে ঊরুর পেছন দিক দিয়ে হাঁটুর নিচের মাংসপেশির মধ্য দিয়ে পায়ের আঙুল পর্যন্ত বিস্তৃত। কোনো কারণে এই নার্ভের ওপর চাপ পড়লে কোমর থেকে পায়ের নিচ পর্যন্ত ব্যথা ছড়িয়ে যায়। একে বলে সায়াটিকা। অধিকাংশ মানুষ কোনো না কোনো সময় এ ব্যথায় আক্রান্ত হয়।

ব্যথার অনেকগুলো কারণের মধ্যে অন্যতম হলো মেরুদণ্ডের কোমরের অংশের ডিস্ক সরে গিয়ে স্নায়ুতে চাপ পড়া। পুরুষ বা নারীর যে কেউ ৩০ থেকে ৫০ বয়সের মধ্যে এ রোগে আক্রান্ত হতে পারে। কোমরের ডিস্ক বা নরম হাড় সরে যায়, বয়সজনিত ক্ষয়বাত, কোমরের শক্ত হাড় সরে গেলে, লাম্বার স্পাইনাল স্টেনসিস চলাচলের পথ সরু হয়ে গেলে, পিরিফর্মিস নামক মাংসপেশিতে টান পড়লে এ ধরনের ব্যথা হয়।

সবসময় ভারী জিনিস উঠানো, ঝাড়ু দেওয়া, টিউবওয়েল চাপা, একনাগাড়ে অনেকক্ষণ বসে কাজ করা, কোমরের ঝাঁকুনি লাগে এমন কাজ, মোটরসাইকেল বা সাইকেলে দীর্ঘ ভ্রমণ করলে এমনটা হতে পারে।

কোমর নাড়াতে, ঘোরাতে তীব্র ব্যথা লাগা, সামনে ঝুঁকে কাজ করার সময় ব্যথা তীব্র হয়, ব্যথা ঊরুর পেছনে, হাঁটুর নিচের মাংসপেশিতে, এমনকি পায়ের তলা ও আঙুল পর্যন্ত ছড়িয়ে যায়, কিছুক্ষণ হাঁটলে বা দাঁড়িয়ে থাকলে ব্যথা ও ঝিঁঝি বাড়ে, বসলে আবার কমে যায়, আক্রান্ত পায়ে শিরশির অনুভূতি, অবশ ও ভার ভার ভাব, সুচ ফোটানোর অনুভূতি লাগা, হাঁচি বা কাশি দিলে, পায়খানা কষা হলে ব্যথা বেড়ে যায়। সাধারণত তিন ধাপে চিকিৎসা করা হয়। কনজারভেটিভ চিকিৎসা, ইন্টারভেনশন (ইঞ্জেকশন) চিকিৎসা, অপারেশন করা হয়। কনজারভেটিভ চিকিৎসা মূলত জীবনযাপনে পরিবর্তন, ফিজিওথেরাপি, ব্যায়াম ও ওষুধের মাধ্যমে চিকিৎসা করা হয়। ফিজিওথেরাপি এ রোগের একটি আধুনিক চিকিৎসা পদ্ধতি। বয়স্কদের যেহেতু এ রোগ বেশি হয়, তাই ওষুধের ব্যবহারই উত্তম। একজন ফিজিক্যাল মেডিসিন বিশেষজ্ঞ রোগীর অবস্থা বিবেচনা করে ফিজিওথেরাপির পরামর্শ দেন। এর মধ্যে শর্ট-ওয়েভ থেরাপি, ট্রাকশন থেরাপি, আলট্রাসাউন্ড থেরাপি, নার্ভ ইস্টিমুলেশন থেরাপি দিয়ে থাকেন।

চিকিৎসক মূলত ব্যথানাশক ওষুধ, মাংসপেশি শিথিল করার ওষুধ ও দুশ্চিন্তা কমানোর ওষুধ দিয়ে থাকেন। ইন্টারভেনশন (কোমরে ইঞ্জেকশন) মেশিনের মাধ্যমে কোমরের জয়েন্টের ভেতরে নার্ভ বা স্নায়ুর গোড়ায় দেওয়া হয়। ফলে স্নায়ুমূলের উত্তেজনা কমে যায়, যা কোমরের ব্যথা কমাতে সাহায্য করে। এ ছাড়া অপারেশনের মাধ্যমেও এর চিকিৎসা করা হয়। বেশি নরম বিছানায় না ঘুমানো, কোমর বাঁকা করে কোনো কাজ না করা, সামনে ঝুঁকে ভারী কিছু না তোলা, ব্যথা থাকলে চেয়ারে বসে নামাজ পড়া, বাথরুমে হাইকমোড ব্যবহার করা, ব্যথা থাকলে ব্যায়াম না করা, শোয়া থেকে উঠার সময় একদিকে কাত হয়ে হাতে ভর দিয়ে ওঠা, চেয়ারে সোজা হয়ে বসে কাজ করা, বেশিক্ষণ দাঁড়িয়ে বা বসে না থাকা, কাজের সময় বা উঁচু-নিচু স্থানে ভ্রমণের সময় কোমরে বেল্ট ব্যবহার করার মাধ্যমে রোগ থেমে মুক্তি মেলে।

লেখক : সিনিয়র কনসালট্যান্ট (লেজার সার্জন) এবং ব্যবস্থাপনা পরিচালক বিএলসিএস ইনস্টিটিউট অ্যান্ড হসপিটাল, আফতাবনগর, ঢাকা

The short URL of the present article is: https://www.nirapadnews.com/nlj2
Notify of
guest
0 মন্তব্য
সবচেয়ে পুরাতন
সবচেয়ে নতুন Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments
Advertisements
সর্বশেষ

চমকে দিলেন নুসরাত ফারিয়া

- Advertisements -
এ বিভাগে আরো দেখুন