English

31 C
Dhaka
শনিবার, এপ্রিল ২৭, ২০২৪
- Advertisement -

সুন্দরবন বাঁচাতে হবে: ব্যবস্থাপনা নিয়ে ভাবুন

- Advertisements -

সুন্দরবন আমাদের গর্ব, আমাদের অহংকার। পৃথিবীর যেকোনো সভ্য জাতিই তাদের ঐতিহ্য নিয়ে গর্ব করে। আর আমাদের সুন্দরবন তো শুধু আমাদের নয়, বিশ্ব ঐতিহ্যেরই অংশ। তাই একে নিয়ে আমাদের গর্বিত হওয়াটাই স্বাভাবিক। কিন্তু এই সুন্দরবন যে প্রতিদিন তার সৌন্দর্য হারাচ্ছে, সেদিকে আমাদের দৃষ্টি নেই। সুন্দরবনে প্রতিনিয়ত মানুষের উপস্থিতি বাড়ছে, অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড বাড়ছে, দূষণ বাড়ছে, অবৈধ অত্যাচার বাড়ছে। ফলে সুন্দরবন ক্রমেই ধ্বংসের পথে এগিয়ে চলেছে। সেখানে বন্য প্রাণীদের আবাসযোগ্যতাও ক্রমেই হ্রাস পাচ্ছে।

সুন্দরবন দিবসে গনমাধ্যমে প্রকাশিত এক খবরে বলা হয়েছে, নদীগুলোর গভীরতা কমছে। সুন্দরবনসংলগ্ন শিবসা ও পশুর নদেও ডুবোচরের মাত্রা বাড়ছে। সেই সঙ্গে বাড়ছে তেলদূষণ, শব্দদূষণ। ঘটছে আগুন লাগার ঘটনাও। মোংলা বন্দরপারে পশুর নদের গভীরতা কমে যাওয়ায় সাম্প্রতিককালে দুটি জাহাজ কাত হয়ে পড়ে।

Advertisements

সম্প্রতি একাধিক গবেষণার তথ্য দিয়ে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, সুন্দরবনে নোনার মাত্রা বেড়েছে। নদীগর্ভে পলিও জমছে অধিক হারে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সুন্দরবনসংলগ্ন নদীগুলোতে পলল বা পলির পরিমাণ অনেক বেশি। এই পলল জমা হয়েই এখানকার ভূমি গড়ে উঠেছে। ভূমি গড়ে ওঠার কাজ সম্পূর্ণ হওয়ার আগেই এখানে স্থায়ী বাঁধের ব্যবস্থা গড়ে তোলা হয়। সুন্দরবনসংলগ্ন এলাকার নদীগুলো পলি জমে ভরাট হয়ে গেছে।

অথচ ঘূর্ণিঝড়-জলোচ্ছ্বাসের মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগের হাত থেকে পুরো দেশকে রক্ষা করছে বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ ম্যানগ্রোভ বন সুন্দরবন। বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড়ের সামনে বারবার বাধা হয়ে দাঁড়ায় এই সুন্দরবন। সাম্প্রতিককালের আম্ফান, বুলবুল, ফণী প্রভৃতি ঘূর্ণিঝড়কে বুক চিতিয়ে আগলেছে এই বন।

Advertisements

অন্যদিকে বায়ুমণ্ডল থেকে প্রচুর পরিমাণে কার্বন ডাই-অক্সাইড টেনে নিয়ে পরিবেশের দূষণ কমায়। দেশের সংরক্ষিত বনভূমির ৫১ শতাংশ অর্থাৎ ছয় হাজার ১৭ বর্গকিলোমিটার সুন্দরবন। সংরক্ষিত এই বনের তিনটি এলাকাকে ১৯৯৭ সালের ৬ ডিসেম্বর জাতিসংঘের ইউনেসকো ৭৯৮তম ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইট ঘোষণা করে, যা সমগ্র সুন্দরবনের ৩০ শতাংশ এলাকা। জলবায়ুর ক্ষতিকর প্রভাব এবং মানুষের সৃষ্ট নানা কারণে সুন্দরবনে গাছপালা ও প্রাণিকুল হুমকির মুখে। দুঃখের বিষয়, আমাদের অজ্ঞতা, অবহেলা, সুন্দরবনের ভেতরের নদীগুলোর লবণাক্ততা বেড়ে যাওয়াসহ পরিবেশ বিপর্যয়ের ফলে অনেক গাছপালা ও প্রাণী বিলুপ্ত হয়েছে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, ম্যানগ্রোভ অরণ্য অন্য যেকোনো অরণ্য থেকে বড় বেশি স্পর্শকাতর। এখানকার বাস্তুতন্ত্রের উপাদানগুলো জটিল ও বহুমাত্রিক। তাঁরা মনে করেন, একটি অধিদপ্তর এবং তার অধীনে সুন্দরবন গবেষণা ইনস্টিটিউট গড়ে তুলে আমাদের দেশের বাস্তবতায় সুন্দরবন ব্যবস্থাপনায় পরিবর্তন আনা প্রয়োজন।

সুন্দরবন রক্ষায় প্রধানমন্ত্রী বর্তমানে এবং অতীতেও আগ্রহ দেখিয়েছেন। তাঁর আগ্রহ বাস্তবায়নের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে—এটাই আমাদের প্রত্যাশা।

সাবস্ক্রাইব
Notify of
guest
0 মন্তব্য
Inline Feedbacks
View all comments
Advertisements
সর্বশেষ
- Advertisements -
এ বিভাগে আরো দেখুন