ব্রাজিলের পণ্যের ওপর অতিরিক্ত ৪০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। গতকাল বুধবার এ সংক্রান্ত একটি নির্বাহী আদেশে সই করেছেন তিনি। এর মধ্য দিয়ে ব্রাজিলের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের আরোপ করা মোট শুল্ক ৫০ শতাংশে দাঁড়াল।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি, রয়টার্সসহ একাধিক আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
হোয়াইট হাউসের এক ঘোষণায় বলা হয়েছে, ব্রাজিল সরকারের রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত দমন-পীড়ন, ভয়ভীতি প্রদর্শন, হয়রানি, সেন্সরশিপ এবং সাবেক প্রেসিডেন্ট জইর বলসোনারো ও তার হাজারো সমর্থকের বিরুদ্ধে বিচারিক ব্যবস্থা গ্রহণ মানবাধিকারের গুরুতর লঙ্ঘন। এগুলো ব্রাজিলে আইনের শাসনকে দুর্বল করে দিয়েছে।
এতে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, ব্রাজিলের অস্বাভাবিক ও ব্যতিক্রমী নীতি ও পদক্ষেপ যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠানগুলো, মার্কিন নাগরিকদের মতপ্রকাশের অধিকার, মার্কিন পররাষ্ট্রনীতি ও অর্থনীতির ক্ষতি করছে। ঘোষণায় বলসোনারোর বিচারে যুক্ত ব্রাজিলের সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি আলেকজান্দ্রে মোরায়েসের নামও আলাদাভাবে উল্লেখ করা হয়েছে।
মোরায়েসের ওপর এই নিষেধাজ্ঞা ঘোষণার পরপরই ব্রাজিলের ওপর শুল্ক ৫০ শতাংশ পর্যন্ত বাড়ানোর আদেশে সই করেন ট্রাম্প।
বিচারক মোরায়েস ব্রাজিলের সাবেক ডানপন্থী প্রেসিডেন্ট জাইর বলসোনারো এবং তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে তদন্তে নেতৃত্ব দিচ্ছেন। ২০২২ সালের নির্বাচনে হেরে যাওয়ার পর বলসোনারো ও তার সহযোগীরা অভ্যুত্থানের ষড়যন্ত্র করেছিলেন অভিযোগে এই তদন্ত চলছে।
এদিকে অভিযোগ অস্বীকার করেছেন বলসোনারো এবং বিচারক মোরায়েসকে ‘স্বৈরাচারী’ বলে অভিহিত করেছেন তিনি।
বিবিসি বলছে, চলতি মাসের শুরুতে ট্রাম্প সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করা একটি চিঠিতে উচ্চ শুল্ক আরোপের হুমকি দিয়েছিলেন ব্রাজিলের বর্তমান প্রেসিডেন্ট লুইজ ইনাসিও লুলা দা সিলভাকে।এতে ট্রাম্প ব্রাজিলকে মার্কিন প্রযুক্তি কোম্পানিগুলোর ওপর ‘আক্রমণ’ এবং বলসোনারোর বিরুদ্ধে ‘হয়রানিমূলক ব্যবস্থা’ নেওয়ার অভিযোগ করেন।
শুল্ক সংক্রান্ত নির্বাহী আদেশে ব্রাজিলের প্রধান বেশ কয়েকটি রপ্তানি পণ্য উচ্চ কর আরোপের আওতা থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে কমলার রস, কিছু বিমানের যন্ত্রাংশ এবং জ্বালানি পণ্য।
এদিকে ব্রাজিলও হুমকি দিয়েছে যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কর্তৃক আরোপিত যেকোনো শুল্কের পাল্টা পদক্ষেপ তারা নেবে।
চীনের পর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ব্রাজিলের দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্য অংশীদার, তাই এই শুল্ক বৃদ্ধি দক্ষিণ আমেরিকার দেশটির ওপর বড় ধরনের প্রভাব ফেলতে পারে বলে জানা গেছে।