English

33 C
Dhaka
বুধবার, এপ্রিল ২৪, ২০২৪
- Advertisement -

বাতাসকে করবে দূষণমুক্ত, শুষে নেবে কার্বন: গাড়ি তৈরি করে শিক্ষার্থীদের চমক!

- Advertisements -

গাড়ি চলবে, অথচ দূষণ হবে না! বরং কার্বন ডাই অক্সাইডের কালো ধোঁয়া গিলে নেবে গাড়িরই ইঞ্জিন। নতুন ধরনের পরিবেশবান্ধব গাড়ি বানিয়ে চমকে দিয়েছে নেদারল্যান্ডসের একদল শিক্ষার্থী।

নেদারল্যান্ডসের আইনধোবেন ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজির শিক্ষার্থীরা এই বৈদ্যুতিক গাড়িটি তৈরি করেছেন। এর নাম দেওয়া হয়েছে ‘জেম’। গাড়িটি রাস্তা দিয়ে চলতে চলতে দূষিত বাতাস পরিষ্কার করবে বলে দাবি করেছেন নির্মাতারা।

বিশেষ এক ধরনের ফিল্টার এই গাড়ির ইঞ্জিনে লাগানো হয়েছে। বলা হচ্ছে, এই গাড়ি বাতাসে যত না কার্বন ডাই অক্সাইড ছাড়বে, ওই ফিল্টারের সাহায্যে তার চেয়ে বেশি কার্বন ডাই অক্সাইড টেনে নেবে। যার ফলে বিশ্ব উষ্ণায়নের কিছুটা লাগাম টানা সম্ভব বলে মনে করছেন নির্মাতারা।

এই গাড়ি ৩০ হাজার কিলোমিটার পথ পাড়ি দিলে বিশেষ ফিল্টারের মাধ্যমে বাতাস থেকে টেনে নেয় ২ কিলোগ্রাম কার্বন ডাই অক্সাইড। যদিও কার্বন ডাই অক্সাইড টেনে নেওয়ার পরিমাণ সামান্য। তবে এই প্রযুক্তির ১২টি গাড়ি বছরে ৩০ হাজার কিমি চললে এক বছরে গড় গাছের সমান পরিমাণ শোষণ করতে পারে।

Advertisements

আপাতদৃষ্টিতে এই গাড়ির কার্বন ডাই অক্সাইড শোষণের ক্ষমতা খুব বেশি নয়। কিন্তু নির্মাতারা বলছেন, যদি ‘জেম’ সকলে ব্যবহার করতে শুরু করেন, আর অন্যান্য গাড়ি যদি সরিয়ে দেওয়া হয়, তা হলেই ঘটতে পারে বিপ্লব। সারা পৃথিবীতে ১০০ কোটির বেশি প্রাইভেটকার চলে। সব ক্ষেত্রে ‘জেম’ ব্যবহার করলে পরিবেশ দূষণ অনেক কমে আসবে, আশাবাদী তারা।

আপাতত গাড়িটিকে একটি প্রাথমিক রূপ দেওয়া হয়েছে। আগামী দিনে তা আরও উন্নত করার চেষ্টা করবেন বলে জানিয়েছেন আইনধোবেন ইউনিভার্সিটির ওই শিক্ষার্থীরা। তাদের দাবি, ‘জেম’-এ যে ফিল্টার ব্যবহার করা হয়েছে, তার ক্ষমতা ভবিষ্যতে আরও বৃদ্ধি করা সম্ভব।

‘জেম’-এর ফিল্টার পুরোপুরি বিষাক্ত গ্যাসে ভর্তি হয়ে গেলে গাড়িতে চার্জ দেওয়ার প্রয়োজন হয়। ফিল্টার ভর্তি হওয়ার আগে এই গাড়ি চালানো যায় ৩২০ কিলোমিটার পর্যন্ত। তার পর চার্জ দিয়ে ফিল্টার খালি করতে হয়।

আইনধোবেন ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজির শিক্ষার্থীরা জানিয়েছেন, গাড়িটিকে সম্পূর্ণ কার্বন মুক্ত করার লক্ষ্য নিয়ে তারা এগোচ্ছেন। অর্থাৎ, যখন তাদের এই গাড়ির চাকা ঘুরবে, তখন একটুও বিষাক্ত গ্যাস যাতে না বের হয়, সেই চেষ্টা চালাচ্ছেন ছাত্ররা।

থ্রি-ডি পেইন্টিংয়ের মাধ্যমে গাড়িটিকে সাজিয়ে তোলা হয়েছে। ছাত্রদের মতে, ‘জেম’ যেমন টেকসই, তেমন দেখতেও চমৎকার। চারচাকার এই গাড়িটিকে অনেকটা স্পোর্টস কারের মতো দেখতে। জেনেশুনেই সেই রূপ দেওয়া হয়েছে ‘জেম’-কে। এতে দু’জনের বসার জায়গা রয়েছে।

আইনধোবেন ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজির মোট ৩৫ জন শিক্ষার্থী এই গাড়ি তৈরির কাজে অংশ নিয়েছেন। সময় লেগেছে এক বছর। আগামী দিনে ‘জেম’ ঘিরে শিল্প গড়ে উঠতে পারে বলে মনে করছেন অনেকে।

Advertisements

পরিসংখ্যান বলছে, গাড়ির ধোঁয়ায় সারা পৃথিবীতে যে পরিমাণ বায়ুদূষণ হয়, তার ৬০ শতাংশের জন্যই দায়ী গাড়ি। সেই কারণেই এমন একটা গাড়ি তৈরির পরিকল্পনা করেছিলেন আইনধোবেন ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীরা। শুধু গাড়ি থেকে বের হওয়া কার্বন ডাই অক্সাইডের পরিমাণ কমানোই নয়, তাদের লক্ষ্য ছিল গাড়ি তৈরির সময়েও যাতে কম দূষণ হয়।

‘জেম’-এ চার্জ দেওয়ার ক্ষেত্রে বিশেষ এক ধরনের পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়েছে। এর মাধ্যমে বাড়ির কাজেও প্রয়োজনে বিদ্যুৎ ব্যবহার করা যাবে। গাড়িটিকে একটি বাড়তি ব্যাটারি হিসেবে দেখতে পারেন ব্যবহারকারীরা।

গাড়িটির মাথায় বসানো হয়েছে সোলার প্যানেল। তার সঙ্গেই চার্জিং প্রযুক্তির সংযোগ ঘটিয়েছেন নির্মাতারা। এর ফলেই ‘জেম’ আরও বেশি টেকসই হয়ে উঠেছে বলে মনে করা হচ্ছে।

গাড়িটির স্বত্বের জন্য আবেদন করবেন আইনধোবেন ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজির ৩৫ শিক্ষার্থী।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে একটি প্রচারমূলক ট্যুরে নিয়ে যাওয়া হয়েছে ‘জেম’। আপাতত তা সেখানকার বিভিন্ন কোম্পানি এবং বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রদর্শন করা হচ্ছে বলে জানা গেছে।

সাবস্ক্রাইব
Notify of
guest
0 মন্তব্য
Inline Feedbacks
View all comments
Advertisements
সর্বশেষ
- Advertisements -
এ বিভাগে আরো দেখুন